লামার রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৪০০ একর ভূমি রক্ষার দাবি

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৫৬ পিএম


লামার রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৪০০ একর ভূমি রক্ষার দাবি

বান্দরবানের লামা উপজেলায় রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক ত্রিপুরা ও ম্রোদের ৩টি পাহাড়ি গ্রামের ৪০০ একর জুম ভূমি দখলচেষ্টা এবং সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক রংধজন ত্রিপুরা। 

রংধজন বলেন, বান্দরবানের লামা উপজেলাধীন সরই ইউনিয়নের ৩০৩ নম্বর ডলছুড়ি মৌজায় ৪০০ একর জুম ভূমি তিন গ্রামের লাংকম পাড়া (ম্রো কারবারি), জয়চন্দ্র পাড়া (ত্রিপুরা) রেংইয়েন পাড়ার (ম্রো) ৩৯ পরিবার বংশ পরম্পরায় ভোগদখল করে আসছে। কিন্তু গত ৯ এপ্রিল লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রকল্প পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম দুইশ জনের বেশি রোহিঙ্গাদের ভাড়া করে ভূমিজ সন্তান লাংকম পাড়া, জয়চন্দ্র পাড়া ও রেংইয়েন পাড়াবাসীদের ওই জমি দখলচেষ্টা করে। একই সঙ্গে ভূমিতে লাগানো ফলদ বৃক্ষ, বাঁশ বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলে তারা। এরপর ২৬ এপ্রিল ওই জমির বাগানে আগুন দেয়। ফলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।

তিনি আরও বলেন,  আমরা তিন গ্রামের মানুষ জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমাদের ৪০০ একর জুম ভূমি দখলের প্রচেষ্টা এখনও বন্ধ হয়নি। এই জমি হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদের বাঁচার আর কোনো উপায় থাকবে না।

সংগঠনের আহ্বায়ক বলেন, আমাদের বাঁচার অবলম্বন এই জমি রক্ষার জন্য প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। কিন্তু ভূমি দস্যুদের এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি আমাদের ওপর হামলাও করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এবিষয়ে বার বার প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো সুবিচার মেলেনি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করা হয়, কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ৫ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি। দাবিগুলো হলো 

১. লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ভূমি দখলচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে ম্রো ও ত্রিপুরাদের ভোগ দখলীয় ৪০০ একর জুম ভূমিসহ কোম্পানি কর্তৃক দখলকৃত সব জমি ফেরত দিতে হবে।

২. ওই কোম্পানির কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো ও ত্রিপুরাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৩. জুম ভূমি আগুনে পোড়ানো ও হামলার সঙ্গে জড়িত কামাল উদ্দিন, মোয়াজ্জেম হোসেন, জহির উদ্দিন সবার গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে হবে।

৪. কোম্পানি কর্তৃক ভূমি রক্ষা কমিটির নেতাসহ ১১ জনের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৫. বান্দরবানে রাবার ও অন্যান্য বাগান পর্যটন উন্নয়নের উদ্দেশ্যে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে দেওয়া সব জমির লিজ বাতিল করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব লাংকম ম্রো, যুগ্ম আহবায়ক রেংয়েন ম্রো, ফদরাম ত্রিপুরা, সংলে ম্রো, মথি ত্রিপুরা, রিংরং ম্রো, রুইপাও ম্রো প্রমুখ।

আইবি/এমএ

Link copied