হামলাকারী সেই চিকিৎসকের সনদ বাতিলের দাবি

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৩৯ পিএম


হামলাকারী সেই চিকিৎসকের সনদ বাতিলের দাবি

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মিসবাহর ওপর হামলাকারী সেই চিকিৎসক ডা. এম এইচ উসমানীর বিএমডিসি সনদ বাতিলের দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিএইচআরএফ। একইসঙ্গে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং হাসান মিসবাহর উন্নত চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের নেতৃত্বে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

স্মারকলিপিতে সাংবাদিক হাসান মিসবাহর ওপর হামলাকারী চিকিৎসক ডা. এম এইচ উসমানী বিএমডিসির অনুমোদনহীন ডিগ্রি ব্যবহার করে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় স্মারকলিপিতে তার নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএইচআরএফ নেতারা। এমনকি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ভূটান সফর শেষে দেশে ফিরলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরও স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বিএইচআরএএফ।

এতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিয়মবহির্ভূত ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তার ভিজিটিং কার্ড, নেমপ্লেট ও প্রেসক্রিপশনে তিনি ডিটিএমঅ্যান্ডএইচ (লিভারপুল), মাস্টার ক্লাস ইন ইন্টারনাল মেডিসিন, সার্টিফায়েড ডায়াবেটলজিস্ট (বারডেম) অ্যান্ড ইন্টারনাল মেডিসিন (ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা), ফেলো রয়েল সোসাইটি অব মেডিসিন (লন্ডন) কোর্স আইডেন্টিটি ব্যবহার করেন। যা বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০ এর ২৯ ধারার ১ উপধারা পরিপন্থি।

আরও পড়ুন: দায়িত্ব পালনের সময় ইনডিপেনডেন্ট টিভির দুই সাংবাদিককে মারধর

অভিযুক্ত চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিবন্ধনহীন হাসপাতাল এবং অনুমোদনহীন ডিগ্রি ব্যবহার করে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে আসছেন। আমরা আরও জানতে পেরেছি, এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছাড়াও ওই এলাকায় তার একাধিক অনুমোদনহীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে রোগীদের অহেতুক হয়রানি, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোসহ ভুল চিকিৎসার অভিযোগও আছে স্থানীয়দের। এছাড়া বর্তমানে স্বাস্থ্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। যার প্রমাণ আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেপ্তারের পর আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করলে তিনি প্রভাব বিস্তার করে অসুস্থতার ভান করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিনে অবস্থান করছিলেন। যদিও আইন অনুযায়ী তা অবৈধ। আর্থিক প্রভাব বিস্তার করে তিনি আদালতে প্রভাব বিস্তারেরও চেষ্টা করেছেন।

ওই চিকিৎসকের হামলায় আহত সাংবাদিক হাসান মিসবাহকে মাথায় প্রচন্ড আঘাত নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ এইচডিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি বাসায় থাকলেও স্বাভাবিক কাজকর্মে অক্ষম। এ অবস্থায় অভিযুক্ত চিকিৎসক তার ওপর নানাভাবে প্রভাব বিস্তার এবং মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছেন। এতে হাসান মিসবাহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ অবস্থায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিএমডিসি সনদ বাতিলের পাশাপাশি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, হাসান মিসবাহর উন্নত চিকিৎসা ও নিরাপত্তা গ্রহণে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

গত ৯ আগস্ট রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিএমডিসি’র সনদ ছাড়াই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হাসান মিসবাহর ওপর হামলা চালায় ওই হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। এসময় তার ক্যামেরাম্যান ও গাড়ি চালককেও মারধর করে ক্যামেরা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরলেও এখনও শারীরিকভাবে অসুস্থ হাসান মিসবাহ। হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন হাসান মিসবাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্লিনিকের মালিক ডা. এম এইচ উসমানীসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে আসামিরা এখন জামিনে মুক্ত আছেন।

টিআই/এসএসএইচ

Link copied