জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের সুপারিশ

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ অক্টোবর ২০২২, ০৫:১০ পিএম


জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের সুপারিশ

তামাকজনিত রোগের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তামাকের প্রভাব থেকে বাঁচতে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত ছয়টি সংশোধনী দ্রুত জাতীয় সংসদে পাস করার তাগিদ দিয়েছেন ডেপুটি স্পিকারসহ সংসদ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের এলডি হলে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন আয়োজিত নবনির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার ও ফোরামের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যরা তামাক নিয়ন্ত্রণে এসব প্রস্তাবনা দ্রুত পাসের তাগিদ দেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফোরামের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত।

সংশোধনী প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে— সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা এবং বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের এনজির রিপোর্ট দেওয়ার পরামর্শ

অনুষ্ঠানে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষণা, তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। আমি নিজেও তামাকবিরোধী নানা কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত আছি। ফোরামের সংসদ সদস্যরা বিদ্যমান তামাক আইনের যেসব সংশোধনী প্রস্তাবনা করেছেন, তাতে আমি একমত। বিশেষ করে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল ও ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা খুবই জরুরি। তামাক ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে, পেশাজীবীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তামাক সংশ্লিষ্ট বিদেশি কোম্পানিগুলো অনেক শক্তিশালী। তারা বিভিন্নভাবে তাদের প্রচারণা চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদ সদস্যদের মাধ্যমেও তাদের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সংসদ সদস্যরা যথেষ্ট সচেতন। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি।

ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, বাংলাদেশের অসুস্থতাজনিত মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশের জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগব্যাধি। যার অন্যতম কারণ তামাক। পার্লামেন্টারি ফোরামের মাধ্যমে আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছি। আমরা দেখেছি তামাক কোম্পানিগুলো কীভাবে কাজ করছে। আমরা তামাক আইন সংশোধন ও ই-সিগারেট নিষিদ্ধের সুপারিশ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে চিঠি লিখেছি। এছাড়াও আমরা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়ন, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক স্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আরমা দত্ত, ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল, শবনম জাহান, সৈয়দা রওশন আরা মান্নান, অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন আহমেদ, শিরীন আহমেদ প্রমুখ।

এমএইচএন/এসএসএইচ

Link copied