কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনে তরুণ নেতৃত্বে বাংলাদেশি ফারজানা

মিশরে চলমান কপ-২৭ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জরুরি পদক্ষেপের আহ্বানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিশু ও তরুণরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন জলবায়ু কর্মী ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের ইয়ুথ অ্যাডভোকেট ফারজানা ফারুক ঝুমু। এই সম্মেলনে তিনি ইউনিসেফের অফিসিয়াল প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য হিসেবে ‘অ্যাট দ্য ফ্রন্টলাইন : চিলড্রেন অ্যান্ড এডোলেসেন্ট লেড একশন ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন।
কপ-২৭ ইয়ুথ অ্যান্ড ফিউচার জেনারেশন্স ডের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (১০ নভেম্বর) বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে যুব শক্তি এবং তাদের অংশগ্রহণ উদযাপন করে।
এসময় ফারজানা ফারুক ঝুমু আবেগঘন বিবৃতিতে বলেন, আমরা আপনাদের অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি। এখন সেই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এখন আমাদেরই সময়। আমি শিশু ও তরুণদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারা তাদের মতামত তুলে ধরে এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আমাদের সঙ্গে যোগদান করে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুরা এমন একটি জরুরি অবস্থার সম্মুখীন যা তাদের তৈরি নয়। এখন সময় এসেছে জলবায়ু পরিবর্তনকে শিশু অধিকারের সংকট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার। ফারজানা ফারুক ঝুমু ও সারা বিশ্ব থেকে আসা তরুণরা কপ-২৭-এ তাদের মতামত জোড়ালোভাবে তুলে ধরেছেন। ইউনিসেফ তাদের জরুরি ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের জন্য পাশে রয়েছে।
জলবায়ু কর্মী ফারজানা ফারুক ঝুমুকে ২০২২ সালে বাংলাদেশের জন্য ইউনিসেফের ইয়ুথ অ্যাডভোকেট হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। জলবায়ুবিষয়ক কার্যক্রম ও অ্যাডভোকেসি ফোরামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি জলবায়ু সংকটকে শিশু অধিকারের সংকট হিসেবে তুলে ধরতে ২০২১ সালে চিলড্রেনস ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স রিপোর্ট প্রকাশে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করেন।
ইউনিসেফের প্রথম চিলড্রেনস ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স (সিসিআরআই ২০২১) অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং শিশুদের ওপর প্রভাবের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৫তম দেশ। এতে উঠে আসে যে বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে বাংলাদেশের শিশুরাও রয়েছে।
বিশ্বে সবচেয়ে কম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীদের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। এদেশে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি শিশু—প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কার্যত দেশের প্রতিটি শিশু চরম আবহাওয়া, বন্যা, নদী ভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অন্যান্য পরিবেশগত অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে শিশুদের শোষণমূলক শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ ও পাচারের শিকার হওয়ার ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে।
টিআই/কেএ