চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের সাড়ে ৩০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের ৩০ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় সোমবার (১৫ মার্চ) প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজধানী
বনানীর ইন্টেরিওর ডিজাইনিং প্রতিষ্ঠান চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের (বাড়ি নং-৬৫, রোড নং-২৭, ব্লক-কে, বনানী) বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় ৩০ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির ২০১২-২০১৩ থেকে ২০১৬-২০১৭ মেয়াদের কার্যক্রম তদন্ত করে। তদন্তের স্বার্থে দলিল দাখিলের জন্য কর্তৃপক্ষকে তলব করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির দাখিল করা বার্ষিক সিএ রিপোর্ট এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটির জমা দেওয়া ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিলাদি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, চারুতা প্রাইভেট লিমিটেড ব্যবসায়িক কার্যক্রম কোড-এস০২৪.০০ হিসেবে নিবন্ধিত হলেও উক্ত সেবার পাশাপাশি সেবার কোড এস০৫০.১০ অনুসারে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পণ্যের বিনিময়ে বাসভবন, বাণিজ্যিক ভবন, অফিস ইত্যাদির অবকাঠামো নির্মাণের নকশা প্রণয়ন ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যেকোনো অবকাঠামোর ভিতরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে ডিজাইন প্রণয়নসহ বিভিন্ন প্রকার সেবা সরবরাহ করে থাকে। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর বিদ্যমান বিধি-বিধান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রণীত আদেশ অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ ও মাসিক দাখিলপত্র সার্কেল অফিসে নিয়মিতভাবে জমা প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ তা পরিপালন করেনি।
তদন্তে দেখা যায় মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭ এর উপধারা (৩) মোতাবেক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন আয়ের বিপরীতে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি ৯৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৯ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৪ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। বিভিন্ন আয়ের বিপরীতে প্রযোজ্য এ ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের উপর ভ্যাট আইন অনুসারে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ২২ হাজার ৬৬৯ টাকা সুদ আদায়যোগ্য হবে। তদন্তে সুদসহ মোট ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৩ টাকা। সে অভিযোগে আজ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তদন্তে উদঘাটিত হওয়া ভ্যাট ফাঁকির টাকা আদায়ের আইনগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলাটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হবে। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে দাবি করা ভ্যাট ফাঁকির টাকার অতিরিক্ত দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা হতে পারে বলেও জানা গেছে।
আরএম/এমএইচএস