‘ছেলেকে চেয়েছিলাম বিদেশে পাঠাতে, তারা কবরে পাঠাল’

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:০৩ পিএম


‘ছেলেকে চেয়েছিলাম বিদেশে পাঠাতে, তারা কবরে পাঠাল’

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বহুল আলোচিত আব্দুল্লাহ আল সোহান হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের বাবা ইউনুস খান।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিলাম, তাই সেই উদ্দেশে আমি বাউফল থেকে এসেছিলাম। ছেলেকে বিদায় জানাতে তার জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও করেছি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা কবরে পাঠাল।’

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সোহান হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ঢাকাস্থ বাউফলবাসী ও সর্বস্তরের জনগণের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

dhakapost

সোহানের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে হত্যাকারীদের কাছ থেকে বাঁচতে একটি হাসপাতালের শৌচাগারে গিয়ে অবস্থান নেন, তবে সেখানেও তার শেষ রক্ষা হয়নি। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সোহানের মৃত্যু হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে একটি বাসার ভাড়াটিয়া ছিল। সে আমাদের না জানিয়ে বিয়েও করেছিল। কিন্তু ওই বাসার মালিকসহ অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা সোহানের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে মারধর শুরু করেন। যদিও আমার ছেলে তাদের বারবার বিয়ের কাবিননামা দেখাতে চেয়েছে। তারপরও তাকে বাহির থেকে সন্ত্রাসী এনে বাড়িওয়ালাসহ মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আমার ছেলে দৌড়ে ওই বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি রাস্তায়ও তার ওপর হামলা করা হয়।’

মানববন্ধনে সোহানের মামা বজলুল হক খোকন বলেন, ‘যারা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, যারা সোহানকে হত্যা করে মায়ের কোল খালি করেছেন। তাদের প্রতি ঘৃণা জানানোরও আমাদের ভাষা নেই। আমাদের একটাই চাওয়া, ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং জড়িতদের অবিলম্বে ফাঁসি দেওয়া হোক। সোহানের মতো হত্যাকাণ্ড যেন আর না ঘটে।’

তিনি বলেন, ‘শুনেছি সোহানের হত্যাকারীরা নাকি বেশ ক্ষমতাবান। তারা নাকি এ ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, হত্যাকারীরা যেন কোনোভাবেই ছাড়া না পায়। সোহানের মতো শান্ত-ভদ্র ছেলেকে যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন, তাদের প্রত্যেকেরই ফাঁসি আমাদের কাম্য।’

প্রতিবেশী এটিএম শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঢাকার অধিকাংশ বাড়িওয়ালারাই নিজেদের ভাড়াটিয়াদের প্রভু মনে করেন এবং তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন। সোহানের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। বাড়িওয়ালাসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা সোহানকে যেভাবে হত্যা করেছেন, তাদেরও জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ীর মানিকনগর এলাকায় বাড়িওয়ালাদের মারধরে মারা যান সোহান। এর আগে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা ইউনুস খান। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

টিআই/এফকে

Link copied