শাল্লার ঘটনায় হেফাজতকে অভিযুক্ত করে বিচার দাবি মহিলা পরিষদের

সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীনসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ওই ঘটনায় হেফাজতে ইসলামকে অভিযুক্ত করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে মহিলা পরিষদ ও সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।
রোববার (২১ মার্চ) বিকেলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ‘হেফাজত ইসলামের হামলার’ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘটনার দ্রুত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লক্ষ্য করলাম, গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও নামক গ্রামে এক ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে হেফাজত ইসলামের কয়েক হাজার সমর্থক ওই গ্রামে হামলা করে।
তারা ৮৮টি বাড়িঘর ও ৭-৮টি পারিবারিক মন্দির ভাঙচুর করে। যখন দেশে স্বাধীনতার ৫০ বছর অনেক আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করা হচ্ছে, তখন দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর এই বর্বর, অমানবিক ও ন্যাক্কারজন ঘটনার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টায় সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আরও জানতে পারলাম, বিগত কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে কথা বলা হচ্ছিল। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি ঘটনাগুলোর পেছনের কারণ উদঘাটন, কেন বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, কারা এর মদদদাতা তা তদন্তের পাশাপাশি এ ঘটনার দ্রুত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে হামলার শিকার পরিবারকে সব রকম সহায়তা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষা ও মানবিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসী সকল সম্প্রদায়ের মানুষসহ সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন, আন্তরিক, দায়িত্বশীল, দায়বদ্ধ ও উদ্যোগী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ওয়াজ মাহফিলে অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষ ও নারীদের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য প্রচার করা হয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে মহিলা পরিষদ সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনুমানভিত্তিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।
একই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে মহিলা পরিষদসহ ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
জেইউ/এসএসএইচ