বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে লাখ টাকায় চুক্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় টিকিয়ে দিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে লাখ টাকায় চুক্তি করতেন রাকিবুল হাসান ওরফে রাব্বি (২৪)। চুক্তি অনুযায়ী রাব্বির ঠিক করা লোক আসল পরীক্ষার্থীর জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে হলে যেতেন।
২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় টিকিয়ে দিতে এক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তিন লাখ টাকায় চুক্তি করেন। সে অনুযায়ী পরীক্ষার দিন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে হলে পাঠানো হয়।
এই ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রায় নয় মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে ধরা পড়লেন রাব্বি। পিবিআই জানায়, রাব্বি বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তিতে কাজ করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার (৯ মে) রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন সিপাহীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পিবিআই এসআইঅ্যান্ডও (অর্গানাইজড ক্রাইম-দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.সারোয়ার জাহান বলেন, ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসল পরীক্ষার্থী সেজান মাহফুজের পরিবর্তে প্রক্সি পরীক্ষার্থী হিসেবে মো. আকতারুল ইসলামকে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় গত ১৩ আগস্ট ডিএমপির কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইতে তদন্তের জন্য আসে। গত ৩ মে থেকে মূলহোতাকে ধরতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রের মূলহোতা রাব্বিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, পরীক্ষার্থী সেজান মাহফুজের সঙ্গে তিন লাখ টাকায় চুক্তি হয় রাব্বির। সে অনুযায়ী সেজানের পরিবর্তে পরীক্ষা দিতে হলে আকতারুলকে পাঠানো হয়।
রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন, তিনি বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা, সরকারি-বেসরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীদের সঙ্গে লিখিত বা ভাইভায় পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তিতে কাজ করেন। এসব চুক্তির অংশ হিসেবে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থীদের হলে পাঠাতেন রাব্বি। আর এসব অবৈধ লেনদেনের জন্য বিভিন্নজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ ও এসএ পরিবহনের মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ব্যবহার করে থাকেন।
রাব্বিকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তার সঙ্গে বড় একটি জালিয়াতি চক্র জড়িত আছে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এমএসি/কেএ