যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা জীবাণুমুক্ত করা লাগবে না

কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যে, সেখান থেকে যে তুলা আনি সেটা লিথিন বা ক্ষতিকারক পোকামুক্তকরণ করে বাজারজাত করা। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা ফিউমিগেশন (জীবাণামুক্ত) করা লাগবে না বলে সম্মতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
রোববার (২১ মে) সচিবালয়ে কাঁচা তুলা আমদানির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ও দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষি সচিব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করা হতো৷ আমাদের দেশে চাহিদার তুলনায় তুলা আমদানি হয় না। আমাদের দেশে দুই লাখ বেলের মতো তুলা আমদানি হলেও প্রতিবছর ৮০ থেকে ৮২ বেলের মতো তুলা প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ মোট চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ তুলা আমদানি করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা যখন তুলা আমদানি করে, তখন সেটিকে ১০ দিন বন্দরে রেখে বিষবাষ্প (ফিউমিগেশন) দিয়ে জীবন্ত ক্ষতিকর পোকা দমন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ছিল, সেখান থেকে আমদানি করা তুলার ক্ষেত্রে যাতে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা না হয়। তুলার এই জীবন্ত পোকা খুবই ভয়ঙ্কর। এই পোকায় আক্রান্ত হলে সেই তুলা দিয়ে আর সুতা হয় না।
ওয়াহিদা আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষবাষ্প দিয়ে আমরা তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করে আসছি। কিন্তু তাদের দাবি ছিল, এই প্রক্রিয়ার দরকার নেই। এটি যাতে আমরা না করি। গেল বছর আমাদের একটি টেকনিক্যাল টিম যুক্তরাষ্ট্রে যায়। বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখা গেছে, তারা তুলার ওই ক্ষতিকর পোকামুক্ত করছে। আর তারা যে প্রেসারে তুলা আমাদের কাছে পাঠায়, তাতে কোনো ক্ষতিকর পোকার বেঁচে থাকার শঙ্কা নেই।
তিনি বলেন, সবকিছু মিলয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেয়, বিষবাষ্প দিয়ে তুলাকে ক্ষতিকর পোকামুক্ত করার প্রক্রিয়া থেকে তাদের রেহাই দেওয়া যেতে পারে।
‘তখন আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি, তারা যদি এ সংক্রান্ত নীতির পরিবর্তন আনে তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তি নেই। তখন তারা জানিয়েছে, যদি কৃষি মন্ত্রণালয় কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করে এমন সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। এরপর আমরা কোয়ারেন্টাইন আইন সংশোধন করি। গেজেটও প্রকাশিত হয়েছে।’
এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাছ থেকে তুলা আমদানিতে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওয়াহিদা আক্তার।
তিনি বলেন, তবে তাদের কোয়ারেন্টাইন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি সনদ লাগবে, যাতে বলা থাকবে এই তুলা সম্পূর্ণ ক্ষতিকর পোকামুক্ত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তুলার চাহিদার ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের চাহিদা মতো দেশে তুলা উৎপাদন হয় না। কারণ, এটি শীতকালীন ফসল। কিন্তু এ সময়ে আমরা বোরো চাষ করি। বোরোর সঙ্গে আমরা আপস করি না।
বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ইউএসটিআরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রেন্ডান লিঞ্চ, দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক মাহনাজ খান, আঞ্চলিক আইপি অ্যাটাশে জন কাবিকা, অ্যাসিস্ট্যান্ট টু দা রিজওনাল আইপি অ্যাটাশে শিল্পী ঝা প্রমুখ।
এমএম/কেএ/এমএ