নির্মাণাধীন ভবনে এডিস নিয়ন্ত্রণে নির্দেশনা সম্বলিত ব্যানার

নির্মাণাধীন প্রকল্পের অভ্যন্তরে ও চারপাশে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা নিধনে করণীয় ও দিক নির্দেশনা অনুসরণ করতে সকল সদস্যদের চিঠি দিয়েছিল রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। সেই নির্দেশনা অনুসরণ করে এখন নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে ব্যানার টাঙিয়ে কাজ করছে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো।
নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনের বাইরে নির্দেশনা সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে রাখতে দেখা গেছে। ব্যানারে লেখা আছে, এডিস মশার বংশ বিস্তার এবং ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ রোধে নির্মাণাধীন ভবন মালিক এবং ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক করণীয় নির্দেশনা পালন করতে হবে। এরমধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের চারপাশে নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে এবং চারপাশে যেন পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। এডিস মশার সম্ভাব্য উৎপত্তিস্থলে মশানাশক স্প্রে, ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়, ডেভেলপার, সমবায় মালিক কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনের ভূগর্ভস্থ তলা, অভ্যন্তর, বারান্দা এবং উন্মুক্ত পানির আধার, বাড়ির ভেতরের উন্মুক্ত নর্দমা ও ভবনের চারপাশ সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমিয়ে না রেখে ৩ দিন পরপর পরিবর্তন করতে হবে। ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের খালি বোতল, ভবন সংলগ্ন বাগানে জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
গুলশান সংলগ্ন বেসিক বিল্ডার্সের লিমিটেডের নির্মাণাধীন একটি ভবনেও এমন ব্যানার টাঙানো দেখে গেছে। এ বিষয়ে নির্মাণাধীন ভবনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাইট ম্যানেজার রাজিব আহমেদ বলেন, রাজউকের এমন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে জোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে আমাদের যতগুলো নির্মাণাধীন ভবন রয়েছে, কাজ চলছে তার সবগুলোতেই এমন ব্যানার টাঙানোর পাশাপাশি নির্দেশনাগুলো পালন করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৩ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে এডিস মশা নিধনে করণীয় ও দিক নির্দেশনা বিষয়ে রিহ্যাবের সঙ্গে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, এডিস মশা বংশ বিস্তারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এডিস মশার উৎস নির্মূল করে সিটি কর্পোরেশন চার মাসব্যাপী (আষাঢ়, শ্রবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন) কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন এলাকাধীন বিভিন্ন ভবন নির্মাণাধীন প্রকল্প ম্যাজিস্ট্রেটসহ পরিদর্শন করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় রিহ্যাব সদস্যদের নির্মাণাধীন প্রকল্পের অভ্যন্তরে ও চারপাশে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা নিধনে সতর্কতা ও দিক-নির্দেশনা অনুসরণ করা আবশ্যক। ভবন নির্মাণ প্রকল্পে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে তাই বিভিন্ন নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তের আলোকেই গত ২৭ মে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্মাণাধীন ভবনের লিফট কোরের খালি জায়গায় যেন পানি জমতে না পারে সেজন্য লিফট লাগানোর পূর্ব পর্যন্ত বালি দিয়ে স্থানটি ভরাট করে রাখা আবশ্যক।
এছাড়া নির্মাণাধীন ভবনে কোনো প্রকার পানি জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ৩ দিন অন্তর অন্তর ব্লিচিং পাউডার, লবণ, মসকিটন ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি চৌবাচ্চাসহ কনস্ট্রাকশন সাইটের চারিপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বিশেষ করে যেন কোনো প্রকার পানি জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নর্দমা ও আশপাশের পানি জমার স্থান। নর্দমা ও আশপাশের পানি জমার স্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এছাড়াও প্রকল্পের অভ্যন্তরে ও চারিপাশে জমে থাকা পানি প্রতিদিন ফেলে দিতে হবে বা পরিবর্তন করতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সিটি কর্পোরেশনের বিজ্ঞপ্তি ও রিহ্যাবের দিক নির্দেশনা অনুসারে সব রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানকে নতুন ভবন নির্মাণ ও পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এডিস মশা নিধনে আবশ্যিকভাবে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় প্রতিষ্ঠান শুধু জরিমানার সম্মুখীন হবে না, একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করবে। এই অবস্থায় নির্মাণাধীন প্রকল্পের অভ্যন্তরে ও চারপাশে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা নিধনে উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করার বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
এএসএস/এমএ