মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশ

চট্টগ্রামে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা এবং সমন্বিত বিদুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাতিলের দাবিতে যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৪ জুন) নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলোজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সভাপতি ও বিশিষ্ঠ নারী জেসমিন সুলতানা পারু ও প্রশিকার উপ-পরিচালক অজয় মিত্র শংকু।
সমাবেশে এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে জলবায়ু-সহিষ্ণু মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করে। এর আলোকে ওই বছরই ডিসেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন। ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেয়। এতে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
‘কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বিরুদ্ধে গিয়ে প্রস্তাবিত সমন্বিত বিদুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনার (আইইপিএমপি) চতুর্থ খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে সবোর্চ্চ ৪০ শতাংশ তথাকথিত পরিছন্ন জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আওতায় উন্নতর প্রযুক্তির নামে আমদানি-নির্ভর অনির্ভরযোগ্য তরল হাইড্রোজেন, আ্যামোনিয়া ও কার্বন সংরক্ষণ প্রযুক্তি প্রবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা দেশের অর্থনীতির ক্ষতিকর হতে পারে।’
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনোমিক্স, জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশের জন্য আইইপিএমপি প্রণয়ন করছে। এর আগে ২০১০ ও ২০১৬ সালেও জাইকার সহোযোগিতায় বিদ্যুৎ খাত বিষয়ক মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি) প্রণয়ন করা হয়েছিল। এগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল আমদানি-নির্ভর কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটে এখন বাংলাদেশ আমদানি করা জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করেও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতে বিনিয়োগ করলে বর্তমান সংকট এতটা গভীর হতো না।
বক্তারা আরও বলেন, আইইপিএমপি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চরম ঘাটতি রয়েছে। জাইকা বা বাংলাদেশ সরকার কোনো পক্ষই এই প্রকল্পের বাজেট ও কার্য়ক্রমে প্রবেশ করেনি। জাপানের কারিগরি সহায়তার অধীনে গোপনে জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে জাইকা এই কাজ করছে। যা ওইসিডিভুক্ত (আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দেশ হিসেবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এমআর/এসএম