দুই ভ্যানচালক খুন, মূল পরিকল্পনাকারী ঢাকায় গ্রেপ্তার

ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে পরপর দুই মাসে ভ্যান চালক মো. জিহাদ ওরফে জয় (১৬) ও নয়ন শেখ (২৫) হত্যার ঘটনায় মূলহোতা মো. রাশেদ কবিরকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-১ এর একটি দল রোববার (২৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের দাবি, দুই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. রাশেদ কবির (৩৩)। রাশেদ ময়মনসিংহের মৃত ইসমাঈল হোসেনের ছেলে।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রাশেদ কবির দুই হত্যাকাণ্ডে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে।
র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপস্ অফিসার) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. পারভেজ মিয়া জানান, গত ৪ জানুয়ারি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের চরমুরারদি ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে থেকে জিহাদ হোসেন নামে (১৬) এক ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ভ্যান চালক জিহাদ মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দিঘলিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত লালু শেখের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হওয়ার আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় নয়ন শেখ (২৫) নামের এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নিহত নয়ন শেখ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বড় গোপালদী গ্রামের লুৎফর শেখের ছেলে।
হত্যার এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দুই মাসের ব্যবধানে দুটি হত্যাকাণ্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র্যাব দুই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে রাশেদকে রাজধানীর ভাটারা হতে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার রাশেদ কবির (৩৩) বিগত ৩ তিন বছর ধরে বোনের বাড়িতে অবস্থান করে তার দুলাভাইয়ের অটোরিকশা চালাতো।
প্রতিদিনের উপার্জিত টাকা দুলাভাইয়ের কাছে জমা দিলেও দুলাভাই তাকে কোনো নগদ টাকা বা বেতন দিতো না। ফলে তার টাকা পয়সার টানাটানি লেগেই থাকত। এ সময় স্থানীয় রিকশা গ্যারেজের মালিক মিজানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয় এবং দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নেয় বোন জামাইয়ের অটোরিকশাটি বিক্রি করে দিয়ে হারানো নাটক সাজানোর।
মিজানের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশেদ কবির অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে এবং অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্যই পরপর দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ছিনতাইকৃত অটোরিকশা প্রতিটির জন্য গ্যারেজ মালিক মিজান কর্তৃক নগদ ১০ হাজার টাকা রাশেদকে দেওয়া হয় মর্মে সে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার রাশেদকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেইউ/এমএ