সংসদ নির্বাচনে আরও পর্যবেক্ষক নেবে ইসি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আরও পর্যবেক্ষক নিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন আহ্বান করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম ধাপে নিবন্ধন না পাওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো এখন চাইলেই ইসির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধন দেবে ইসি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনে আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাগুলোকে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার মধ্যে নির্ধারিত ফরমে সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর আবেদন দাখিল করতে হবে। আবেদন ফরম (ঊঙ-১) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখায় (কক্ষ নং-১০৫) এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আবেদনের জন্য নিম্নবর্ণিত যোগ্যতা থাকতে হবে :
পর্যবেক্ষক সংস্থাকে বাংলাদেশের কোনো আইনের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে; গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রের সব ধরনের বিষয়সহ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে; কেবল সেসব বেসরকারি সংস্থাই নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে; সংস্থাকে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হতে হবে।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন বা আছেন কিংবা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী, এরূপ কোনো ব্যক্তি যদি পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদনকারী কোনো সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের বা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হয়ে থাকেন, তা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন ওই সংস্থাকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন করা হবে না।
ইসিতে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক এমন কোনো প্রতিষ্ঠান যার নামের সঙ্গে জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের হুবহু মিল রয়েছে; এমন প্রতিষ্ঠান ইসিতে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ইসিতে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক এমন কোনো প্রতিষ্ঠান যার নামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের হুবহু মিল থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ওই আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সংস্থা হতে লিখিত অনাপত্তিপত্র আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইসিতে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ইতঃপূর্বে ইসিতে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচন (জাতীয় সংসদ উপনির্বাচন/স্থানীয় সরকারের যেকোনো নির্বাচন) পর্যবেক্ষণ না করে থাকলে সেই সংস্থা নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে না। তবে শর্ত থাকে যে, ২০১৮ সালের আগে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা যারা ২০১৮ সালে নিবন্ধিত হতে পারেনি; তাদের প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের মেয়াদ থাকাকালীন অনুষ্ঠিত যেকোনো নির্বাচন (জাতীয় সংসদ/সংসদ উপনির্বাচন/স্থানীয় সরকার) পর্যবেক্ষণ করে থাকলে সেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন প্রাপ্তির জন্য আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
আবেদনের সঙ্গে নিম্নলিখিত দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে:
সংস্থার গঠনতন্ত্র; সংস্থার বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড/পরিচালনা পর্ষদ/কার্যনির্বাহী কমিটির তালিকা; পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি; পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধিত অফিসের নাম ও ঠিকানা (পরিবর্তন হলে তার স্বপক্ষে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকতে হবে); গত দুই বছরের সম্পাদিত কার্যক্রমের বার্ষিক প্রতিবেদন; আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনাপত্তিপত্র কার্যকরী/নির্বাহী কমিটির কোনো সদস্য আগে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা বর্তমানে জড়িত নেই মর্মে সংস্থার প্রধান কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র প্রভৃতি।
এর আগেও এ ধরনের আবেদন আহ্বান করেছিল ইসি। সেসময় ২১০টি আবেদন পড়লেও ইসির বাছাইয়ে টেকে ৬৮টি সংস্থাটি। দুইটি নাম নিয়ে অভিযোগ থাকায় নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষক প্রায় অর্ধেকে নেমে যাওয়া ফের আবেদন নিচ্ছে ইসি।
২০০৮ সাল থেকে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক নিবন্ধন দিচ্ছে ইসি। সে সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ১১৮টি সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছিল সংস্থাটি।
এসআর/কেএ