দুর্ভোগ কমাতে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত, বিভ্রান্তির অবকাশ নেই

ঢাকাসহ দেশের সবকটি সিটি করপোরেশনে জনস্বার্থে গণপরিবহন চালুর যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কেউ কেউ যে অভিযোগ করছেন তা সঠিক নয়। জনগণের দাবির মুখে জনস্বার্থে দুর্ভোগ কমাতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই। দু’একদিনের মধ্যে দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে কেউ কেউ অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন, যা মোটেও সত্য নয়।
তিনি বলেন, হেফাজত ইসলাম নামে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের বিদ্যমান স্বস্তি এবং শান্তি বিনষ্টে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তা সহনশীলতার সব মাত্রা অতিক্রম করেছে। জনগণের জানমালের সুরক্ষা দিতে শেখ হাসিনা সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উস্কানিদাতাদের তালিকা প্রস্তুত করে এদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। যারা দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে বা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের জনগণের ধৈর্য ও সহনশীলতার একটা সীমা আছে! সীমা অতিক্রম করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড় করিয়েছেন ও দেশের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছেন শক্ত ভীতের ওপর।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে আছে বলেই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপরীতে আওয়ামী লীগ এখনও দায়িত্বশীল আচরণ করছে, দেখাচ্ছে সহনশীলতা। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ জাতি, কোনো ধর্মান্ধতাকে সমর্থন দেয় না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। আগুন নিয়ে খেলতে গেলে সে আগুনে আপনাদের হাত পুড়ে যাবে।
কাদের বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে জমি জমার গুরুত্বপূর্ণ দলিল, খতিয়ান, নামজারি রেকর্ড ছাই হয়ে গিয়েছে, ভূমির প্রয়োজনীয় দলিল নথিপত্রের অভাবে বংশপরম্পরায় মামলা-মোকদ্দমায় লড়তে হবে, সুতরাং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ধ্বংসাত্মক আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার ঘৃণ্য খেলায় মত্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আঘাত এলে প্রতিঘাত করতে জানে এবং আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণও করতে জানে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর অবমাননা জাতি আর সহ্য করবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ভাস্কর্যের ওপর যারা হামলা করেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের এ ধৃষ্টতার জবাব দেবে।
সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগুন সন্ত্রাস ও অশুভ শক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে।
এইউএ/জেডএস