ল্যাবএইডে পজিটিভ গ্রীন লাইফে নেগেটিভ!
গত ১২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টায় ল্যাবএইড হাসপাতালে করোনা টেস্টের নমুনা দিয়েছিলেন গর্ভবতী নারী তানিয়া আক্তার। রাতে মেসেজ পেলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত। অর্থাৎ রিপোর্ট ‘করোনা পজিটিভ’। পরিবারের সবার নেগেটিভ, একমাত্র তানিয়ার পজিটিভ। সংশয় নিয়ে ২৪ ঘণ্টা পর ১৩ এপ্রিল সকালে এবার গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নমুনা দেন তিনি। ফলাফল এলো ‘নেগেটিভ’।
উভয় হাসপাতালেই নাক ও জিহ্বা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। একদিনের ব্যবধানে কীভাবে পরিবর্তন হয় রিপোর্ট?
তানিয়ার ভাগ্নি জুয়াইরিয়া মৌমি মঙ্গলবার ফেসবুকে ওই ঘটনা তুলে ধরে একটি পোস্ট দেন। মুহূর্তে ভাইরাল হয় সেটি। মৌমি জানান, তার গর্ভবতী খালা তানিয়ার মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ইতালির ফ্লাইট ছিল। ফ্লাইটের জন্য করোনা টেস্ট করতে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দেন।
খালাত ভাই-বোন ও খালুর রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসলেও তানিয়ার করোনা রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসে। পরদিন সকালে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে গিয়ে আবার করোনা টেস্ট করানোর পর তার খালার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না তার, ছিলেন সম্পূর্ণ সুস্থ।
আমার ছোট খালামনির আজকে ভোর ৬ টায় ফ্লাইট ছিলো ইতালির। করোনা রিপোর্ট লাগবে দেখে গতকাল সকাল ৮ টায় ল্যাবেইড হসপিটালে করোনা...
Posted by Juairia Moumie on Tuesday, April 13, 2021
মৌমি বলেন, যেখানে ১২ তারিখ (এপ্রিল) রাত ২টার দিকে তাদের এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা, সেখানে খালার পজিটিভ রিপোর্ট দেখে সব যেন মুহূর্তের মধ্যে তছনছ হয়ে যায়। রেজাল্ট পেয়ে সাথে সাথে আমার মামা আর খালু ল্যাবএইডে গিয়ে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানানো হয়, ‘ল্যাবএইডের নাকি ১০% রিপোর্ট পজিটিভ দেখানো লাগে’। ল্যাবএইডের ভুলের কারণে বুধবার লকডাউনে আটকে যান তারা।
১০% পজিটিভ রিপোর্ট কাকে দেখাতে হবে— জানতে চাইলে ল্যাবএইড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-ই খোদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যে অভিযোগটা করা হয়েছে সেটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না। আমারও প্রশ্ন, কাকে দেখাতে হবে ১০% পজিটিভ রিপোর্ট? অভিযোগটা সঠিক নয়, ভিত্তিহীন। যিনি প্রচার (ফেসবুক) করেছেন, তিনি মূলত নিজের প্রচারণার জন্য এমন আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। তারপরও তিনি যদি আমাদের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেন, বিস্তারিত শুনে আমরা তাদের আপডেট জানাব।’
একদিনে রিপোর্ট পাল্টে যাওয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “বিশ্বে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ রিপোর্ট ‘ফলস পজিটিভ’ বা ‘ফলস নেগেটিভ’ আসতেই পারে। এছাড়া আমরা একটি সুপার সেনসিটিভ কিট (সংবেদনশীল কিট) দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে থাকি। যদি কারও মধ্যে করোনাভাইরাসটি সুপ্ত অবস্থায়ও থাকে আমাদের কিট সেটা শনাক্ত করে ফেলবে। এমন অনেক হয়েছে যে আমাদের পজিটিভ রিপোর্টের পর অন্য জায়গায় নেগেটিভ এসেছে। তবে আট থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ওই ব্যক্তির আবারও পজিটিভ ধরা পড়েছে।”
এআর/এমএআর/