বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে দুই সিটিতে পৃথক অভিযান

করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১১টি মামলা করেছে। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে। এসময় ১৪টি মামলায় সর্বমোট ১৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ডিএসসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতগুলোর নেতৃত্ব দেন।
ডিএসসিসির আঞ্চল-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা নাজনিন বেইলি রোড, মগবাজার, হাতিরপুল ও নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ৩টার পর যেসব দোকানপাট, কাঁচাবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল সেগুলো বন্ধ করা হয়। হাতিরপুল ও নিউমার্কেট কাচা বাজারে ব্যবসায়ীদেরকে বাজারের বাইরে রাস্তার একাংশে বসে সাময়িকভাবে মাছ-মাংস, তরকারি বিক্রি করতে উৎসাহিত করেন।
অঞ্চল-২ এর নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জোর তত্ত্বাবধানে শাহজাহানপুর বাজার, মতিঝিল কলোনী বাজার, শান্তিনগর বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় ১৫০টি দোকান ও ব্যক্তিকে বিভিন্ন কারণে সতর্ক করা হয়।
অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশী মোড় কাঁচাবাজার ও ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।
অঞ্চল-৪ এর নির্বাহী কর্মকর্তা হায়দর আলী ৩২, ৩৪, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুবাজার, কাপ্তানবাজার, ধোলাইখাল, বাহাদুর শাহ পার্ক ও লালকুটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
আঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগর বাজার ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের সূত্রাপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।
অঞ্চল -৬ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের টুলটুলিয়া বাজার ও ধীতপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি সরকারি বিধিনিষেধ যথাযথভাবে পরিপালন না করায় প্রায় ৫০টি দোকানকে সতর্ক করেন।

অঞ্চল -১০ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন মিয়া ৫৮, ৬০ ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামপুর ও দনিয়া এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
এছাড়াও ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত খিলগাঁও ও সিপাহীবাগ বাজারসহ অঞ্চল ২ এর অন্যান্য বাজার ও দোকানপাট পরিদর্শন করেন। এ সময় সরকারী বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় আদালত ৫টি মামলা দায়ের ও নগদ ৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা অঞ্চল-৩ এর পলাশী বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে না চলায় দুটি মামলার মাধ্যমে ১ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
করপোরশেনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ অঞ্চল ৫, ৯ ও ১০ এর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় আদালত সরকারের আদেশ না মেনে দোকান খোলা রাখা, মাস্ক না পরে জনসমাগমস্থলে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে চারটি মামলা দায়ের করেন এবং ৫ হাজার ৯০০ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।
অভিযান প্রসঙ্গে করপোরশেনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের বলেন, জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে এবারের লকডাউন দৃশ্যমানভাবে মেনে চলছে। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় সরকারি বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা আমরা দেখেছি। সাধারণত আমরা জনগণকে জরিমানা করতে চাই না। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এবারের লকডাউনে আমাদেরকে একটু কড়াকড়ি আরোপ করতেই হচ্ছে। সেই আলোকে সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে দোকানপাট খোলা রাখায় মামলা দায়ের ও তাদেরকে জরিমানা করেছি।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার অঞ্চল-৪ এর ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারের আদেশ অমান্য, মাস্ক ব্যবহার না করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলা, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও দোকান খোলার দায়ে সাত মামলায় সাত হাজার টাকা আদায় করা হয়।
অন্যদিকে অঞ্চল-৯ এর ৩৯ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে অপর সাত মামলায় আরও ছয় হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এভাবে ১৪ মামলায় আদায়কৃত জরিমানার সর্বমোট পরিমাণ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা।
এএসএস/ওএফ