ইসির দক্ষতা বাড়ানোর প্রকল্পে গতি নেই

জনসাধারণের সেবার মানন্নোয়নে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রকল্পে দুরবস্থা কাটছে না। প্রকল্পের দুই বছরে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
সম্প্রতি ইসির মূল্যায়ন কমিটির সভায় এ চিত্র উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন খন্দকার। ২০১৮ সালে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ (এসসিডিইসিএস)’ প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, জনসাধারণের সেবার মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল ইসি, সেটির তেমন কোন অগ্রগতি নেই। স্মার্টকার্ড বা ইভিএম প্রকল্পের তুলনায় এ প্রকল্পের তেমন কোনো কাজই হয়নি। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা ছাড়াও ইসির অনেক সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ নাগরিকরা।
কর্মকর্তারা জানান, এ প্রকল্পে যে পরিমাণ প্রশিক্ষণ হওয়া দরকার, তা দেওয়া হচ্ছে না। ফলে প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে আছে। ইসি সচিব স্বাক্ষরিত মূল্যায়ন কমিটির সভার কার্যবিবরণীতেও প্রকল্পের কাজে গতি না থাকার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
ইসির ওই সভায়, যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) ও এসসিডিইসিএস প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক জানান, প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি হয়নি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসসিডিইসিএস প্রকল্পের অনুকূলে মোট ব্যয় হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৪ লাখ টাকা, যা আরএডিপি বরাদ্দের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, জুলাই ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পের অনুকূলে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সক্ষমতা বাড়াতে তেমন প্রশিক্ষণ হয়নি। এসসিডিইসিএস প্রকল্পের আওতায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং এর আওতাধীন মাঠপর্যায়ে কর্মরত ১০০ জন কর্মকর্তাকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যেখানে ইসিতে প্রায় হাজার খানেকের মতো কর্মকর্তা রয়েছেন। এছাড়া ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুবছর মেয়াদী মাস্টার্স অন প্রকিউরমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং মাঠপর্যায়ের নির্বাচিত ৫ জন কর্মকর্তা অধ্যয়ন করছেন।
অন্যদিকে, ইংরেজি ভাষা দক্ষতা কোর্সে ৬৫ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই সভার কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়েছে, সভায় প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছরে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরে প্রকল্পের ব্যয় আশানুরূপ করা সম্ভব হয়নি। তবে এ অর্থবছরে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স এবং আইসিটি সংক্রান্ত কোর্সের কয়েকটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
ইসির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, মূলত দুবছর বড় বড় নির্বাচন হয়েছে। যে কারণে কর্মকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন। প্রশিক্ষণ বা সক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম ব্যাপক আকারে হাতে না নিতে পারার এটিও একটি কারণ। তবে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এ বিষয়ে মনযোগ দেওয়া হবে।
এসআর/আরএইচ/জেএস