পানি খেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের ইফতার, দায়িত্ব নিল নাভানা গ্রুপ

করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ইফতারের দায়িত্ব নিয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান নাভানা গ্রুপ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সরা রোজা রেখে ইফতার নিয়ে দুর্ভোগে পড়ার সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) মামুন রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ইফতার নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তারপর হাসপাতালটির পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে রোজার মাস শেষ হওয়া পর্যন্ত সব স্বাস্থ্যকর্মীর ইফতারের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।
তিনি বলেন, নাভানা গ্রুপ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীসহ রোগীদের সেবায় কাজ করে আসছে। আমরা রাজধানীসহ ৬৩ জেলায় সরকারি হাসপাতালে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়েছি। যার প্রতিটির মূল্য চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে। এছাড়াও দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে আমরা দেশের প্রথম চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করি।
এই প্রসঙ্গে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের ইফতারের জন্য তো সরকারিভাবে কোনো বাজেট থাকে না। কোভিড হাসপাতালে কর্মরত প্রত্যেক মেডিকেল অফিসার মাসে ১৫দিন ডিউটি করে প্রতিদিন দুই হাজার টাকা করে পাবেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মূল বেতনের বাইরেও কোভিডে চিকিৎসা সেবার জন্য যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া বাবদ আলাদা অর্থ দেওয়া হচ্ছে। তারপরও আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নাভানা গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে ইফতারের ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে আপাতত একটাই সমস্যা, সেটি হলো ক্যান্টিন না থাকা। একটা করোনা হাসপাতালে এটা তো হঠাৎ নির্মাণ করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুতই একটি ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করতে। আশা করি, এক সপ্তাহের মধ্যেই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
নাসির উদ্দিন বলেন, নতুন একটি প্রতিষ্ঠান চালুর পর কিছু সমস্যা থাকেই। পর্যায়ক্রমে সেগুলোর সমাধান হয়। আর এই হাসপাতালটি আমরা মাত্র ১৭ দিনে তৈরি করেছি। এর মধ্যেই চিকিৎসক নার্স নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা উপযোগী করে চিকিৎসাও শুরু করেছি। এটা অনেক বড় ব্যাপার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটিতে কর্মরত এক চিকিৎসক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথম কয়েকটি রোজায় ইফতার নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সরাসরি করোনা রোগীদের সংস্পর্শে এসে কাজ করায় ইফতার কিনতে বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না আমাদের। ফলে আমাদের অনেককেই শুধুমাত্র পানি পান করেই ইফতার শেষ করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম হাসপাতাল থেকেই ইফতারের ব্যবস্থা করা হবে। ফলে বাসা থেকেও নিয়ে আসা হয়নি। পরবর্তীতে বাসা থেকে আনলেও দীর্ঘক্ষণ ব্যাগে আবদ্ধ অবস্থায় থাকার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কেউ কেউ ইফতারও করতে পারে না। একেবারে বাসায় গিয়ে রোজা ভাঙে।
টিআই/এসকেডি