যৌতুকের দাবিতে খিলগাঁওয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়ায় যৌতুকের দাবিতে নাসরীন আক্তার বৃষ্টি (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা মশিউর রহমান স্বামী নুরুল ইসলাম ও শাশুড়ি কমলা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার পর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টি পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর ভাইজোড়া গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে। বৃষ্টি ও নুরুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে বৃষ্টিকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় তাকে নির্যাতন করত। ভুক্তভোগী তার স্বামীর পরিবারের সঙ্গে খিলগাঁও মেরাদিয়া মধ্যপাড়া ২৪/২ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাদের কোনো সন্তান নেই।
শুক্রবার (২১ মে) খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়- বিয়ের সময় বৃষ্টির বাবা মশিউর রহমানের কাছ থেকে নুরুল ইসলাম ব্যবসার কথা বলে এক লাখ টাকা নেয়। ওই টাকা পেয়ে বৃষ্টির শ্বশুর বাড়ির লোকজনের লোভ আরও বেড়ে যায়। পরে তারা বৃষ্টিকে তার বাবার বাড়ি থেকে আরও দুই লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু এতে বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় তাকে দীর্ঘদিন ধরে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিল শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
তিনি বলেন, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ মে) সন্ধ্যায় বৃষ্টির শাশুড়ি ও স্বামীর নির্যাতনে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন বৃষ্টিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় নুরুল ইসলাম। এর মধ্যে বৃষ্টির বাবা মশিউর রহমানকে নুরুল ইসলাম ফোন করে জানায় তার মেয়ে অসুস্থ। তাকে স্থানীয় আল রাজি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে সেখানে বৃষ্টির চাচা মো. মারুফ হোসেন পাঠায় মশিউর রহমান। মারুফ হোসেন হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন বৃষ্টি মারা গেছে, তাকে তার স্বামী নিয়ে গেছে। তখন তিনি বৃষ্টির স্বামীর বাড়ি গিয়ে বৃষ্টির মরদেহ দেখতে পান। বৃষ্টির দেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্নও দেখেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ বৃষ্টির বাবা থানায় এসে নরুল ইসলাম ও কমলা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি।
এমএসি/এসএসএইচ