ভঙ্গুর ট্রাফিক ব্যবস্থা উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ কাউন্টার পদ্ধতি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ভঙ্গুর ট্রাফিক ব্যবস্থা উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ কাউন্টার পদ্ধতি। সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশের একটা ব্যাপক ভূমিকা আছে। এই দায়িত্বটি আমার। শুধু পুলিশের মাধ্যমে চাঁদাবাজি বা হয়রানি নয় বরং এর বাইরেও যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা হয়রানির শিকার হলে আমাকে জানান। আমি সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরার আজমপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীতে কাউন্টার ও ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে বাস চলাচল’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমি এবং আমার সহকর্মীদের নিয়ে শ্রমিক এবং মালিক উভয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করবো। শুধু ট্রাফিক নয় বরং ঢাকাবাসী যেন ভালো থাকেন সেজন্য সবধরনের ব্যবস্থাই নিয়েছি। থানায় গিয়ে জিডি করতে গিয়ে যাতে কোনো মানুষ হয়রানির শিকার না হয় এবং জিডি হলে যাতে থানা পুলিশ আপনার দোরগোড়ায় পৌঁছায় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমার লোকেরা যাতে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কোনো লোকের ওপর কোনো রকম হয়রানি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি। যদি আমার লোকেরা (পুলিশ) এমন কিছু করে তাহলে সেটা আমার দৃষ্টিগোচর করেন। আমি শক্ত ব্যবস্থা নেব। আমার লোকদের বাইরেও যদি অন্য কেউ চাঁদাবাজি বা হয়রানি করে তবে সেগুলোও আমার নোটিশে আনেন। আমি সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, একজন বিদেশি যাত্রী বিমানবন্দরে নেমেই আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা দেখেন। আসলে এই ট্রাফিক ব্যবস্থা দিয়ে আমাদের পুরো জাতির শৃঙ্খলার বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা এতটাই ভঙ্গুর ও বিশৃঙ্খলা যা উপস্থাপনের যোগ্য নয়। এই ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে আমাদেরকে অনেক উপহাস পর্যন্ত করা হয়। এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। শৃঙ্খলাকে ফিরিয়ে আনতে কোনো টাকা আপনাদের (পরিবহন মালিকদের) ব্যয় করতে হবে না। আপনারা শুধুমাত্র অভ্যাসের পরিবর্তন করলেই ট্রাফিক ব্যবস্থায় ব্যাপক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু এই কাজটা আমরা করছি না। এই কাজটা করা অত্যন্ত জরুরি। সেলক্ষ্যেই আজই-টিকিটিং পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে যাত্রীদের যত্রতত্র ওঠা-নামার বন্ধ করে একটা নির্দিষ্ট স্থানে ওঠা-নামার ব্যবস্থা করা হবে।
গাড়ির মালিক সমিতির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যে ড্রাইভাররা কষ্ট করে গাড়ি চালায় তাদের অ্যাপার্টমেন্ট লেটার (নিয়োগপত্র) দিবেন। সেই নিয়োগপত্রে প্রয়োজনীয় শর্তের কথা উল্লেখ করে দিবেন। যে এই শর্ত না মানবে তার নিয়োগ বাতিল করা হবে।
যাত্রীদের উদ্দেশ্য ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাস চালকরা যদি আপনাদের রাস্তার মাঝে নামাতে চায় তাহলে আপনারা নামবেন না। আপনি বলবেন আমাকে যাত্রী ছাউনিতে নামাও। কারণ, এটিই আপনার জন্য নিরাপদ। তারপরও যারা আপনাদের রাস্তার মাঝখানে নামাতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে আপনারা অভিযোগ করবেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম. এ. বাতেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো.সরওয়ার ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.সাইফুল আলম।
আরএইচটি/এআইএস