বিমানবন্দর-কমলাপুর পাতাল রেল ২০২৮ সালে চালুর আশা করা হচ্ছে

রাজধানীর যানজট কমানোর লক্ষ্যে পাতাল রেল নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৮ সালে এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুর রউফ বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত পাতাল রেলের নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে।
প্রস্তাবিত রুটের দুটি অংশের মধ্যে নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত বর্ধিত বা সম্পূরক একটি অংশ রয়েছে। বর্তমানে কুড়িল-নর্দা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ইউটিলিটি পরিষেবাগুলো স্থানান্তরের কাজ চলছে। দুটি রুটের দৈর্ঘ্য হবে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, আমরা স্টেকহোল্ডারদের বিশেষ করে রুটের আশপাশের বাসিন্দাদের পরামর্শ গ্রহণ করে তাদের অসুবিধাগুলো কমিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছি।
রউফ আরও বলেন, জনদুর্ভোগ কমিয়ে নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য আমরা স্টেকহোল্ডার এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফৌজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠক করেছি।
ডিএমটিসিএলের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বিশেষ করে কুড়িল-নর্দা সড়কে ইউটিলিটি পরিষেবাগুলো স্থানান্তরের কাজে বাসিন্দাদের সহযোগিতা কামনা করছেন।
এদিকে ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত এমআরটি লাইন-১ এবং এর ডিপোর জন্য ৮৮ দশমিক ৭১ একর ভূমি উন্নয়নের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে।
তারা বলেন, ১২টি প্যাকেজের অধীনে এমআরটি লাইন-১ এর কাজ করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ১১টি টেন্ডারিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং শেষ প্যাকেজ আগামী সপ্তাহে সম্পন্ন হবে।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সালে দুই বছরের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হওয়ার পরে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান এবং সম্পূরক উভয় রুটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। পুরো এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পটি ১২টি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করতে খরচ হবে ৫৩ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্প সহায়তা হিসাবে দিচ্ছে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা দিচ্ছে সরকার।
প্রকল্পের অধীনে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এর মধ্যে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে ১৪টি ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকবে এবং বাকি ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার রুট এলিভেটেড লাইন হবে।
বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটে ১২টি আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন থাকবে এবং বাকি দুটি স্টেশন থাকবে নতুন বাজার-পূর্বাচল রুটে।
তারা বলেন, উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বিদ্যমান মেট্রোরেল পরিষেবা এমআরটি-৬ লাইনের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। এছাড়া, একটি মেগা পরিকল্পনার অধীনে একটি ১৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে- যার প্রায় অর্ধেক হবে ভূগর্ভস্থ। ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা মহানগর এবং সংলগ্ন এলাকা জুড়ে এটি নির্মিত হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ছয় লাইনের পরিকল্পিত নেটওয়ার্কটি ১০০ টিরও বেশি স্টেশনের মাধ্যমে শহরের ১২৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় ৫০ লাখ লোককে সেবা দিতে সক্ষম হবে।
আরও দুটি এমআরটি লাইনের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা।
এমএ