বিমানবন্দরে ভিড়ের মধ্যে প্রবাসীর অর্থ লোপাট, দুজন আটক

ঢাকা বিমানবন্দরে নানা উপায়ে প্রবাসী যাত্রীদের অর্থ ও মালামাল লোপাটকারী চক্রের দুজনকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাদের আটক করা হয়।
এপিবিএন জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি কাতার থেকে বাংলাদেশে আসার পর প্রবাসী মানিক খান বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় ও গত ৭ ফেব্রুয়ারি জেদ্দা থেকে আসা প্রবাসী পাবনা জেলার বাসিন্দা আরিফ প্রমানিক বিমানবন্দরের ২ নং ক্যানোপি এলাকায় অবস্থানকালে প্রায় একই কায়দায় সুকৌশলে কে বা কারা তাদের সঙ্গে থাকা টাকাসহ ব্যাগগুলো হাতিয়ে নেয়। মানিক খানের ব্যাগে ছিল ৩৭০০ রিয়ালসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। আরিফ প্রামাণিকের ব্যাগে ছিল ৪৭৩৫ রিয়াল। দুজনই পরবর্তীতে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অফিসে চুরির কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন
এপিবিএন জানায়, প্রথম ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া না গেলেও গত ৭ ফেব্রুয়ারি'র ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা পায় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তারা দুজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় কিন্তু তাদের মুখ ছিলো মাস্ক। সিসিটিভিতে পাওয়া সামান্য তথ্য দিয়েই শুরু হয় অভিযান। ৪ দিন পর মঙ্গলবার শাহদুজ্জামান খোকন (৫৫) ও নিজাম উদ্দিন (৪৪) বিমানবন্দর এলাকায় সন্দেহজনকভাবে অবস্থান করলে তাদেরকে আটক করে বিমানবন্দর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়ই অপরাধের কথা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
এরপর ভুক্তভোগী যাত্রীদের সংবাদ দিলে তারা বিমানবন্দর এপিবিএন অফিসে হাজির হন। যাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটকদের বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তাদের ১০ হাজার করে মোট ২০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, দুই যাত্রীর চুরি হওয়া ব্যাগ উদ্ধার করে বিমানবন্দর এপিবিএন অফিস থেকে আইনগত প্রক্রিয়া অবলম্বন করে টাকা ও মালামাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রবাসী যাত্রী আরিফ প্রামাণিক জানান, এইভাবে ৪ দিন পর ব্যাগ ও সকল মালামালসহ টাকা উদ্ধার অবিশ্বাস্য। সিসিটিভি বিশ্লেষণ করে এভাবে অপরাধী শনাক্ত করায় ও আমাকে মালামাল বুঝিয়ে দেয়ায় আমি এপিবিএনকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রবাসী মানিক খান আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এই টাকা ও ব্যাগের আশা আমি পুরোপুরিভাবে ছেড়ে দিয়েছিলাম। একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে এতদিন পরে আমাকে ডেকে আমার চুরি করা মালামাল ফেরত দেবে এটা সত্যিই আমাকে বিমোহিত করেছে। প্রবাসী হিসেবে দেশের পুলিশ নিয়ে গর্ববোধ হচ্ছে।
জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস) অনিতা রানী সূত্রধর বলেন, অনেক প্রতারক ও পকেটমার যাত্রীবেশে ক্যানোপি এলাকায় অবস্থান করে। এ ধরনের প্রতারক ও পকেটমারসহ অন্যান্য যাত্রী হয়রানি দমনে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ কাজ করে আসছে। আমরা বিমানবন্দর ঘিরে সকল অপরাধ কার্যক্রম রোধে সচেষ্ট আছি।
এআর/এমএসএ