এনআইডি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানেন না ইসি সচিব

দুর্ভোগ-জটিলতা নিরসনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) নির্বাচন কমিশনের অধীন থেকে সরিয়ে নিতে সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে সরকারের এনআইডি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানেন না নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এনআইডির কাঠামোগত অবস্থানটা আরও ব্যাপ্ত করার জন্যে, একটু বাড়ানোর জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, এটার ব্যাপারে কেবিনেট ডিভিশন একটা উদ্যোগ নিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর বাইরে কিছু বলার অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এনআইডি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমি কিছু স্পষ্ট করে জানি না।
ইসির এনআইডি উইং মহাপরিচালক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সোমবারের বৈঠকে মতামত দিয়ে এসেছেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, খসড়ার ব্যাপারে গতকাল কথা হয়েছে। এটা আলোচনাধীন রয়েছে। এটা কেবিনেট ডিভিশনের প্রাধিকার। অতিরিক্ত সচিব লেভেলের মিটিং হয়েছে। সিম্পল ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে মতামত দিয়েছে। কোনো কিছু চূড়ান্ত নয়। ইসির অধীন থেকে এনআইডি সেবা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্ট সেবা নিয়ে দুর্ভোগ-জটিলতা নিরসনে স্বতন্ত্র কমিশন প্রতিষ্ঠায় ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’ নামে একটি অধ্যাদেশ করার উদ্যোগ নিচ্ছে বর্তমান সরকার। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতও নিচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। খসড়াটি নিয়ে পর্যালোচনার লক্ষ্যে আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এ বৈঠকে ইসি সচিবালয়ের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে আইন করা হয়েছিল, ক্ষমতার পালাবদলে এবার তা বাতিল চেয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। তাদের দাবি অনুযায়ী আইনটি বাতিল হলে এনআইডি সেবা বরাবরের মতই নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। এ প্রস্তাব অনুমোদনের পর সরকারকে এখন অধ্যাদেশ জারি করে আইনটি বাতিল ও আগের আইন বহাল করতে হবে।
আরও পড়ুন
এ ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নিজেদের কাছে রাখতে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এটা সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এরই মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা নামে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠন করার’ বিষয়ে সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে।
অবশ্য এ নিয়ে বেশ আপত্তি জানিয়ে ২৬ জানুয়ারি সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ভোটার এনআইডি কার্ড, ভোটার রেজিস্ট্রেশন যেটা উনারা বলেছেন পরবর্তী পর্যায়ে একটা আবার স্বাধীন অধিদপ্তর/পরিদপ্তরে হ্যান্ডওভার করার জন্য সাজেস্ট করছে। আরেকটা কর্তৃপক্ষকে দিলে আমার কি তার ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে? ইটস ইমপসিবল।
এসআর/এমএন