নারী-শিশু ধর্ষণকারীদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

নারী ও শিশুর প্রতি চলমান সহিংসতা, নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিচালক ও অভিনয় কলাকৌশলীরা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা প্রতিনিয়ত নিপীডনের শিকার হচ্ছে। নারী-শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ধর্ষণকারীদের ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশ তারা বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, এসব ঘটনার কোনো সাজা হয়নি। ফলে ধর্ষণের ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই কাজে যে ধরা পড়েছে, সে জেল থেকে বেরিয়ে আবারো একই কাজে লিপ্ত হয়েছে।
তারা আরও বলেন, দেখা গেছে যিনি ধর্ষণের শিকার হন, তিনি অসহায় থাকেন। গ্রামের মোডলরা মিলে একটা সালিশি করে ধর্ষকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। সেই টাকা মোড়লরা ভাগ করে নিয়ে সামান্য কিছু টাকা দেয় ধর্ষণের শিকার নারীকে। এ সমস্ত ঘটনা আমরা মানি না। ধর্ষককে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। ধর্ষণের বিচার টাকা দিয়ে হতে পারে না।
আরও পড়ুন
নারী নির্মাতা লিপি আইস বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পুরুষকে শক্তভাবে করতে হবে। বর্তমান অবস্থায় পুরুষরাই এগিয়ে আসছেন এবং তারাই প্রতিবাদ করছেন। পুরুষরা এগিয়ে আসলে ধর্ষকরা লজ্জিত হবে। বাংলাদেশ আরও জাগ্রত হবে, নারীরা স্বাধীনতা ভোগ করবে।
নারী নির্মাতা রাশেদা আক্তার লাজুক বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় অস্থিরতা চলছে। এজন্য নারী-শিশুদের প্রতি এরকম আক্রমণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের এত সমস্যা থাকতে আমরা নারীরা কেন টার্গেট হচ্ছি? এজন্য আমরা আজ প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছি। আমরা জানি না সমাজকে কতটা নাড়া দিতে পারব। আমরা কিছু সংখ্যক মানুষ প্রতিবাদের জন্য দাঁড়িয়েছি। আমাদের শিশুরা যেন সুন্দর সমাজ ব্যবস্থায় বেড়ে উঠতে পেরে। নারীরা যেন সব কাজ শেষ করে নির্বিঘ্নে বাসায় ফিরতে পারে।
পাংখা মনির বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। তাদের দায়িত্ব অবিলম্বে ছোট্ট মেয়েটার ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির ব্যবস্থা করা।
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের নেতারা বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় মাত্র আট বছরের বয়সী শিশু নৃশংসভাবে দর্শনের শিকার হয়। যা জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনা প্রমাণ করে নারীরা নিরাপদ নয়।
তারা আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্যোগজনক। প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নারী-শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হোক।
প্রতিবাদ সমাবেশে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি ও অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান, পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, পরিচালক প্রীতি দত্তসহ ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের অন্যান্য সদস্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএন/এসএম