‘নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করছি’

দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান।
তিনি বলেন, আমরা নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করছি। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য অনেক সরকারি সংস্থা উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে কাজ করছে। কিন্তু যখন নারীরা এই সেবাগুলো গ্রহণের চেষ্টা করে, তখন সমাজ তাদের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে সেভ দ্য চিলড্রেনসহ বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতায় “নারীর ক্ষমতায়নে আগামীর নির্মাণ” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
কেয়া খান বলেন, নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে আমরা ১০টি জেলায় কাজ করছি, কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়। আমরা প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেছি এবং ধর্মীয় নেতাদের সাথে কাজ করছি যেন তারা বাল্যবিয়ের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হন। এই কমিটিগুলোকে আরও সক্রিয় করতে হবে এবং তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি যে অনেক অভিভাবক নিরাপত্তাজনিত কারণে মেয়ে সন্তানদের অল্প বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন। আমাদের এমন সামাজিক পরিবর্তন দরকার, যা শিশুদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেবে। নানা ধরনের সাইবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড শিশু ও কিশোরীদের সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। সাইবার সিকিউরিটি এবং মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আইনে স্পষ্ট বিধান থাকা জরুরি।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমব্যাসি অব দ্য কিংডম অব দ্য নেদারল্যান্ডস ইন বাংলাদেশের হেড অব মিশন আন্দ্রে কার্স্টেনড। এসময় তিনি বলেন, জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক নারী দিবস গ্রহণের প্রায় পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সেই সময়েই এই দিনটি ছিল ষাট বছরেরও বেশি পুরোনো। নারীদের সমতার জন্য এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল এক শতাব্দীরও বেশি আগে।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে বেইজিং ঘোষণাপত্র ও কর্মসূচির ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে, তাই এর বছরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই নথিটি নারী এবং কিশোরী মেয়েদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে অগ্রসর ও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত রূপরেখা। এটি আইনগত সুরক্ষা, সেবা পাওয়ার সুযোগ, তরুণদের সম্পৃক্ততা, এবং সামাজিক মানসিকতা, অতীতের ধ্যানধারণায় পরিবর্তন এনে এজেন্ডাটিকে রূপান্তরিত করেছে।
এর আগে অনুষ্ঠানে লিঙ্গ সমতার গুরুত্ব এবং নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের জন্য কৌশল গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, এনজিও এবং নারী নেতৃত্বাধীন সংগঠনসমূহের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নারীদের অর্জনকে সম্মানিত করা হয় এবং ক্ষমতায়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে একটি ফ্ল্যাশ মব পরিবেশিত হয়, যা লিঙ্গ সমতা অর্জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। এছাড়াও কি-নোট প্রেজেন্টেশন, আলোচনা পর্ব, এবং "শেপিং টুমরো: উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ"-এর আওতায় বিশেষ পুরস্কার বিতরণ করা হয়, যেখানে ১১টি সংগঠনকে নারীর ক্ষমতায়নে সময়োপযোগী ও উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
টিআই/এমএসএ