মিছিলে মিছিলে প্রতিবাদী মানুষের গর্জন, লোকে লোকারণ্য চারদিক

মানুষের ঢল এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। লোকে লোকারণ্য আশপাশের সব এলাকা। একের পর এক মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছেন মানুষ। তাদের স্লোগানে কম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মিছিলগুলো থেকে ভেসে আসছে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষের সম্মিলিত গর্জন।
ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে আজ (শনিবার) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। বিকেল ৩টায় এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এখানে আসা প্রায় সবার হাতে রয়েছে দেশের পতাকা ও ফিলিস্তিনের পতাকা। সবার লক্ষ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, সেখানে গাজার নিরস্ত্র জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ, বিশ্বজনমত গঠন এবং মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
মূল অনুষ্ঠান বিকেলে হলেও সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি গেটে মানুষের ঢল নেমেছে। গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন এবং মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী এই গণজমায়েত। বিকেল ৩টা থেকে মাগরিবের পূর্ব পর্যন্ত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে এই ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। এরই মধ্যে চলছে কম্পিত হওয়া মিছিল আর স্লোগান।
মিছিলে অংশ নিয়েছেন ধানমন্ডি থেকে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুলফিকার আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জীবনে মহাপ্রলয় নেমে এসেছে। ফিলিস্তিনের মুসলমানরা ইসরায়েলি বাহিনীর নির্যাতন, হামলা ও দখলদারিত্বের শিকার হয়ে আসছে। এই অবস্থায় আমরা মুসলিম হিসেবে কিছুই করতে পারছি না। আজ অন্তত সুযোগ এসেছে আমরা পাশে আছি- এটা জানান দেওয়ার। আর এটাই আমাদের প্রতিবাদ। মুসলমান হিসেবে তাদের প্রতি সমর্থন জানানো আমাদের কর্তব্য।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এই একই কাজ আজ করতে এসেছেন লাখ লাখ মুসলিম। এখানে এমন অবস্থা, মানুষের এত ব্যাপক উপস্থিতি, পা ফেলার জায়গা পর্যন্ত নেই। লোকে লোকারণ্য আশপাশের সব এলাকা।
দোয়েল চত্বরের দিক থেকে টিএসসি হয়ে মিছিলের সঙ্গে আসা আরেকজন মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনো কর্মসূচিতে মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে বাইরে এত মানুষের ঢল আগে কখনো দেখিনি। যতদূর দেখা যাচ্ছে দল বেঁধে আসছে মানুষ, যেন এক জনসমুদ্র। সবার কণ্ঠে স্লোগান আর ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার। গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। মুসলিম হিসেবে অন্য মুসলিমদের পাশে যে আমরা আছি তা জানান দিতেই আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে গোটা বিশ্বেই। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে আয়োজিত হচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য গাজার নিরস্ত্র জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ, বিশ্বজনমত গঠন এবং মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার হওয়া।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এতে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারি থেকে শুরু করে তারকা খেলোয়াড়, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এই আয়োজনে সরব সমর্থন জানিয়েছেন।
এএসএস/এমএ