বিএডিসি কর্তৃপক্ষের কাছে অনিয়মিত শ্রমিকদের ৯ দাবি

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃপক্ষের কাছে ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বিএডিসির অনিয়মিত শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানায় তারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ‘কৃষি ফার্ম শ্রমিক ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭’ প্রণয়নের ৮ (আট) বছর অতিবাহিত হয়েছে। এরই মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএডিসি) এর ছিটেফোঁটাও বাস্তবায়ন হয়নি।
আরও পড়ুন
সময়ে সময়ে মন্ত্রণালয় হতে ‘কৃষি ফার্ম শ্রমিক ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭’ বাস্তবায়নের জন্য বিএডিসির সম্মানিত চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হলেও তা বিএডিসি বাস্তবায়ন করেনি। এর একমাত্র কারণ শ্রমিকদের ওপর যাতে নির্যাতন করা যায় এবং ৩০ দিনের হাজিরা যাতে দেওয়া না লাগে, শ্রমিকরা যাতে ৩০ দিনের বেতন না পায়, শ্রমিকরা যাতে নিয়মিত না হতে পারে। তাই কৃষি মন্ত্রণালয় হতে চিঠি পাঠানো হলেও বিএডিসি তা বাস্তবায়ন করেনি। যার ফলে বিএডিসিতে ‘কৃষি ফার্ম শ্রমিক ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭’ আলোর মুখ দেখেনি।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ থেকে অন্যায়, বৈষম্য ও সর্বোপরি সংস্কার বাস্তবায়নে শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষি কাজ করে যাচ্ছে এবং বিএডিসির ভাবমূর্তি রক্ষা করছে। দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমরা বিএডিসির শ্রমিকদের একটা বড় অংশ হিসাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা নিয়ে কাজ করি। শ্রমিক বাঁচলে কৃষি বাঁচবে, কৃষি বাঁচলে, দেশ বাঁচবে। উল্লেখ্য, বিএডিসির কিছু কর্মকর্তা শ্রমিকদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, তারা উক্ত প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি ম্যানুয়াল তৈরি করে, যা কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিরোধী হওয়ায় এখনো তা অনুমোদিত হয়নি।
তাই সরকারের কাছে বিএডিসির অনিয়মিত শ্রমিকদের আবেদন :
১। কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত কৃষি ফার্ম নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭ বিএডিসিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। যারা বছরে ২৪০ দিন কাজ করেছে তাদের অনিয়মিত শ্রমিক থেকে নিয়মিতকরণ শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।
৩। বিএডিসির একজন শ্রমিক যে স্থানে কর্মে নিয়োজিত ঐ স্থানের কর্মের মজুরি প্রদান করতে হবে।
৮। বিএডিসি শ্রমিকদের মাসে ৩০ (ত্রিশ) দিনের হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে।
৫। বিএডিসি শ্রমিকদের সময় বেঁধে কাজ চাই, অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য পারিশ্রমিক দিতে হবে।
৬। শ্রমিকদের বিএডিসি থেকে বিনা কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা বন্ধ করতে হবে।
৭। শোষণমুক্ত, মর্যাদাসম্পন্ন, বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ, অধিকার সুরক্ষা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৮। বিএডিসি নারী শ্রমিকদের বেতন ভাতাসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ০৪ (চার) মাস নিশ্চিত করতে হবে।
৯। ‘মৌসুমি শ্রমিক’ নামক প্রহসন থেকে মুক্তি ও বিএডিসি শ্রমিক ম্যানুয়াল অবিলম্বে অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে বাতিল করতে হবে।
এমএম/এআইএস