লংমার্চে পুলিশি হামলা : গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে সাংবাদিক লিমন

আবাসন সংকটসহ তিন দফা দাবিতে লংমার্চ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস হামলার শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক আন্দোলনকারী ও সংবাদকর্মী। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা পোস্টের জবি প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব লিমন। তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।
পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছোড়ে। এতে অন্তত ১০০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরও। আহতদের মধ্যে ৩৮ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা পোস্টের আহত সাংবাদিক মাহাতাব লিমন বলেন, ‘আমরা যমুনার অভিমুখে লংমার্চ করছিলাম। হঠাৎ করেই পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করে। সাংবাদিকদেরও ছাড় দেয়নি। একটি টিয়ারশেল আমার বুকে এসে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এখনও শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন বর্বরতা আমরা জুলাই আন্দোলনেও দেখিনি। নারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকও রেহাই পাননি। আমরা দোষীদের বিচারের দাবি জানাই।’
আহতদের মধ্যে আছেন— রেদোয়ান (২৪), আসিফ (২০), রহমান (২২), আকিব (২১), আরিফ (২২), রফিক (২৫), শফিক (২৫), ওমর ফারুক (২৪), সংবাদকর্মী মেহেদী হাসান (২৪), অর্থিব (২১), আপেল (২১), মুজাহিদ (২৩), রায়হান (২৩), ফারুক (২৩), আবু বক্কর (২২), নিউটন (২০), হানিফ (২২), জীবন (২২), শহীদ (২০), রাসেল (২২), জিসান (২২), গৌরব (২৫), আব্দুল মান্নান (২২), নাহিদ (২৩), জুয়েল (২৩), মোহন (২২), সোহানুর রহমান সানি (২৪), মাছুমা (২০), সংগ্রাম (২০), বাইতুল (২২), রাজু (২২), সুমন (২২), রাজীব (২২), আকাশ (২২), বাংলা ট্রিবিউনের জবি প্রেস ক্লাব সভাপতি আসাইফ আশরাফ (২৬)।

এছাড়া আহত হয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেলাল এবং সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি।
পুলিশি হামলায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকেই শারীরিকভাবে গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাতে যাচ্ছিলাম। পুলিশ কোনো উসকানি ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ।’
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দায়ীদের বিচার ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
টিআই/এমএ