বেজা থেকে জমি পেল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ম্যারিকো

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৬ জুন ২০২১, ০৬:২১ পিএম


বেজা থেকে জমি পেল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ম্যারিকো

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে জমি লিজের চুক্তি সই করেছে ভারতের অন্যতম ভারতের প্রসাধন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড। রোববার (৬ জুন) বেজা কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ গোপালসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বেজা সংশ্লিষ্টরা।

বেজা’র পক্ষে নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আহসান এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. আশিষ গোপাল জমি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে (মিরসরাই, ফেনী ও সীতাকুণ্ড অর্থনৈতিক অঞ্চল) ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের তৃতীয় কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এখানে প্রায় ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ৫০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কারখানায় মূলত প্রসাধন-সামগ্রী এবং পিইটি বোতল প্রস্তুত হবে।

বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, বেজা’র হাত ধরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ-বান্ধব সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে এবং বিশ্বের কাছে উন্নয়নের একটি রোল মডেল স্থাপন করেছে। মিরসরাইতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মিত হচ্ছে। এর ফলে এদেশে শিল্পায়নের অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হবে। শিল্পাঞ্চলের ফলে জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো পূরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, সবুজ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে নীতি নির্ধারণের কাজও শিগগির বাস্তবায়িত হবে। ভৌগোলিক ও কৌশলগত অবস্থানের কারণে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ আসছে, এবং ম্যারিকো তাদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের এ অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান পবন চৌধুরী।

ম্যারিকো বাংলাদেশের ম্যানেজিং পরিচালক আশীষ গোপাল বলেন, বর্তমানে ম্যারিকোর ৯৯ শতাংশ পোর্টফলিও বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা। ১০টি ক্যাটাগরির ৩৬টি ব্র্যান্ড রয়েছে ম্যারিকোর। আমরা দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে পণ্য রফতানি করছি।

তিনি বলেন, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ এর একটি গর্বিত অ্যাম্বাসেডর হয়ে দেশ ও দেশের বাইরে ভোক্তাদের বিশ্বমানের পণ্য সরবরাহে আমরা সর্বদাই সচেষ্ট। উৎপাদন পরিধি বাড়াতে ২২০ কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের মাধ্যমে পোর্টফোলিও আরও মজবুত করতে বদ্ধপরিকর। বেজাতে বিনিয়োগকারী সেবার দ্রুততা এবং দক্ষতা নিয়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর।

ইতোমধ্যে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ এখানে নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে- জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস, সিঙ্গাপুরের উইলমারসহ আরও অনেকে এবং দেশি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ, টি কে গ্রুপ ছাড়াও আরও বিভিন্ন বিনিয়োগকারী। এই শিল্পনগরে ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বেজার সুসমন্বয়ের ফলে নির্মিত হয়েছে শেখ হাসিনা সরণি, দেশের সর্বপ্রথম সুপারডাইক, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ।

এই শিল্পনগরে বর্তমানে ১৩টি শিল্প নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে এবং আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান শিল্প নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। জুলাই মাস নাগাদ কমপক্ষে দুটি শিল্প কারখানা উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ শিল্পনগরের মাধ্যমে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। করোনা মহামারির সময়েও এ শিল্পনগরের জন্য প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

এসআর/এমএইচএস

Link copied