নারীমুক্তি আন্দোলনের পুরোধা কবি সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ

আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিল যার আপসহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা সেই মহিয়সী কবি সুফিয়া কামালের ১১০তম জন্মদিন আজ (২০ জুন)। নারীমুক্তি, গণতন্ত্র ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা কবি সুফিয়া কামাল ১৯৯১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এ আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।
পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ কারফিউ উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তিনি।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থেমেধ্যে রয়েছে সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি । এছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলো এবং একাত্তরের ডায়েরি তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ। সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশি পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কবির জন্মদিন উপলক্ষে রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে কবি সুফিয়া কামালের ১১০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনলাইনে স্মারকবক্তৃতা, কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা প্রদান এবং সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
এসএম
