ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ব্যারিস্টার মওদুদ আন্তরিকভাবেই দেখতে চেয়েছিলেন

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন আন্তরিকভাবে দেখতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত একটি হোটেলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের লিখা ডিমাইজ অফ ডেমোক্রেসি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি একজন বিরল প্রতিভাবান মানুষ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সাহচর্যে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম, এই রাজনীতি করার কারণে, সেটা আমার জন্য নিঃসন্দেহে অত্যন্ত বড় সৌভাগ্যের কথা। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং তার বই সম্পর্কে আমি খুব বেশি আলোচনা এখানে করতে পারবো না। এ জন্য আমার দুর্বলতা স্বীকার করে নেই। বইটা পড়ার খুব বেশি সুযোগ আমার এখনো হয়নি। কিন্তু তার কাজের সঙ্গে আমি কিছুটা পরিচিত।
তিনি বলেন, এই জায়গায় আমার একটা কথা মনে হয় রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমদের কিছুটা সমালোচনা থাকতে পারে, বিতর্ক থাকতে পারে। তবে ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে তার কোনো সমালোচনা খুব বেশি করার সুযোগ আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না। এটা আমার জানা যে স্বাধীনতার পরে এখানে কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় একইভাবে একটা দুঃশাসন চলেছে। একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা তৈরি করার আগের যে ঘটনা হয়েছে, রক্ষী বাহিনী তৈরি করা হয়েছে, মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে, নিপীড়ন করা হয়েছে। খুলনার শান্তি সেন কমিউনিস্ট নেতা, তার স্ত্রী, শালিকা এবং হানুফা বেগম নামে আর কমিউনিস্ট কর্মীকে রক্ষীবাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তার করে তাদেরকে ২১ দিন চরম নির্যাতন করে রক্ষীবাহিনী ক্যাম্পে থেকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে এসেছিল। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ সেদিন ইয়াং আইনজীবী, তিনি তাদেরকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছিলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই যে কতগুলো ঘটনা– যেগুলো আমার হঠাৎ করে মনে পড়ছে। এ থেকে এটাই প্রমাণিত হয়, সত্যিকার অর্থেই আন্তরিকভাবে একজন গণতান্ত্রিক নেতা গণতান্ত্রিক সত্তা ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন, তার মধ্যে যদি আমরা খুঁজে দেখি– আমরা দেখব গণতন্ত্রে ফিরে আসার উপায়টা বের করতে তিনি সেখানে গিয়েছেন। মুহূর্তে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের খুব বেশি দরকার ছিল। কারণ আমরা একটা অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, এই অস্থিরতা থেকে যে মানুষগুলো আমাদের পথ দেখাতে পারতেন, দিশা দেখাতে পারতেন, তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ ছিলেন অন্যতম– নিঃসন্দেহে। আমার দুঃখ হয় যে তিনি এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনটা দেখে যেতে পারেননি। যেটা তিনি আন্তরিকভাবেই দেখতে চেয়েছিলেন।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে মওদূদ আহমেদের সহধর্মিণী হাসনা ওয়াদূদ বলেন, তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অনেক আত্মত্যাগ করেছেন। তিনি সংঘাত ও প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি। তিনি দেশের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ রেখে গেছেন, যার উৎস দেশপ্রেম।
এমএসি/বিআরইউ