রাজনৈতিক বিভাজন নয়, ঐকের বাংলাদেশ গড়বে জামায়াত

প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধের রাজনীতি বন্ধ করে একটি ঐক্যভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকারের কথা জানালেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলগুলো দেশের রাজনীতিকে দমন-নিপীড়ন আর বিভাজনের পথে ঠেলে দিয়েছে, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ বারবার পথ হারিয়েছে। পাঁচ আগস্ট পরবর্তী বাস্তবতা– জাতি আর সেই পুরোনো রাজনীতি দেখতে চায় না। মানুষ চায় বৈষম্যহীন, কল্যাণমুখী, মানবিক বাংলাদেশ। আর সেই পথেই দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে জামায়াত।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা-৬ আসনের ধূপখোলা মাঠে ড. আব্দুল মান্নান প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল শেষে পুরস্কার বিতরণী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জানান, অতীতে কেউ বাকশাল, কেউ স্বৈরশাসন, আবার কেউ একদলীয় শাসন চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। বিরোধী মত দমন ছিল সেই রাজনীতির মূল উপাদান। কিন্তু দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়– ঐক্যের রাজনীতি, দায়িত্বশীলতা, এবং জবাবদিহিতা চায়। তিনি বলেন, খেলাধুলা একটি জাতির মেধা-চরিত্র গঠনে বড় ভূমিকা রাখে, আর মাদক সেই শক্তিকে নিঃশেষ করে।
‘যুব সমাজকে মেধাসম্পন্ন, দক্ষ এবং নেতৃত্বের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে মাদকমুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য’–বলেন মুজিবুর রহমান। তার অভিযোগ, পূর্ববর্তী সরকারগুলোর দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির কারণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগই নিতে পারেনি। যুব উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট হয়েছে, কিন্তু যুব সমাজের বাস্তব উন্নয়ন হয়নি।
জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিস্তৃত করে সুসংগঠিত ক্রীড়া-অবকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। তার মতে, যুবকরাই সমাজ পরিবর্তনের মূল শক্তি, আর তাদের রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত করেই শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।তিনি উপস্থিত যুবদের দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতের নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা-৬ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘যুব সমাজকে প্রথমে মাদককে ‘না’ বলতে শিখতে হবে। সুস্থ দেহ, সুস্থ মন, সুস্থ সমাজ– এসবের জন্য যুবকেরাই সবচেয়ে বড় শক্তি।’ আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে জানিয়ে তিনি যোগ করেন, জামায়াত সেই নেতৃত্ব তৈরির কাজ করছে।
পুরস্কার বিতরণী সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক কামরুল আহসান হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন– বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম এবং ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ফাইনাল খেলার চ্যাম্পিয়ন হয় কোতোয়ালি স্পোর্টিং ক্লাব এবং রানার্সআপ কবি নজরুল কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব।
এদিকে পৃথকভাবে আয়োজিত হাজী এনায়েত উল্লাহ ফুটবল টুর্নামেন্টেও বংশাল দক্ষিণ থানা চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়ন দলকে একটি কম্পিউটার ও রানার্সআপ দলকে একটি ফ্রিজ পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন– ঢাকা-৭ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হাজী এনায়েত উল্লাহ।
অন্যদিকে, খিলগাঁও দক্ষিণ থানার উদ্যোগে শান্তিপুর ও গোড়ান বাজারে অনুষ্ঠিত উঠান বৈঠকে ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী কবির আহমদ তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার আহ্বান জানান।
টিআই/বিআরইউ