ফ্রাঙ্কো-জার্মান মানবাধিকার পুরস্কার পেলেন সুমাইয়া ইসলাম

বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের (বিএনএসকে) নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার রক্ষক সুমাইয়া ইসলাম ২০২৫ সালের ফ্রাঙ্কো-জার্মান মানবাধিকার ও আইনের শাসন পুরস্কার অর্জন করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্স ও জার্মানির রাষ্ট্রদূত জঁ-মার্ক সেরে-শারলে এবং ড. রুডিগার লোটজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাসে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সুমাইয়া ইসলামকে এই পুরস্কার প্রদান করেন।
অভিবাসী নারী শ্রমিক, যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার এগিয়ে নেওয়ার দীর্ঘদিনের নিষ্ঠা ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সুমাইয়া ইসলাম এ বছর পুরস্কারটি অর্জন করেছেন।
একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাগরিক সমাজের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে সুমাইয়া ইসলাম গত দুই দশক ধরে বিএনএসকে ও বমসাসহ তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছেন, যেগুলো অভিবাসী নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি এখন বহু আঞ্চলিক নাগরিক সমাজ নেটওয়ার্কে অবদান রাখছেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
পুরস্কার গ্রহণের সময় সুমাইয়া ইসলাম বলেন, এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় এবং এই ফ্রাঙ্কো-জার্মান মানবাধিকার পুরস্কার পেয়ে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ ও গভীরভাবে আনন্দিত। ১৯৮৭ সাল থেকে আমি আন্দোলন, প্রচারাভিযান এবং অ্যাডভোকেসিতে যুক্ত আছি এবং পরে বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নাগরিক সমাজ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। এই স্বীকৃতি আমার কাজ এবং বিএনএসকের প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বিশ্বব্যাপী নারী অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা ও অগ্রগতির জন্য আমাদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জঁ-মার্ক সেরে-শারলে বলেন, নারীর অধিকার ছাড়া মানবাধিকার সম্ভব নয়। ফ্রান্স বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং ২০২৫ সালের ফ্রাঙ্কো-জার্মান মানবাধিকার ও আইনের শাসন পুরস্কার অর্জনের জন্য সুমাইয়া ইসলামকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি মানবাধিকারের প্রতি তার অঙ্গীকার বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের অন্যদেরও মানবাধিকার রক্ষা এবং লিঙ্গসমতা অগ্রসর করতে অনুপ্রাণিত করবে।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ বলেন, তৃণমূল মানবাধিকার রক্ষকরা অধিকার সুরক্ষা, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং যারা প্রায়শই উপেক্ষিত থাকে তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেন।
এর আগে, ২০১৭ সালে অধিকার-এর প্রতিষ্ঠাতা আদিলুর রহমান খানকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি। তার আগে ২০১৬ সালে আর্টিকেল ১৯–এর তাহমিনা রহমান এই পুরস্কার পান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে ফ্রান্স ও জার্মানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষায় অসাধারণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যৌথভাবে এই সম্মাননা প্রদান করে আসছে।
এনআই/এমজে