অযত্নে নষ্ট হচ্ছে পটিয়ার দেড় কোটি টাকার মুক্তিযোদ্ধা ভবন

ভবনের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতেই চোখে পড়ে ধুলোবালি আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। দেখলেই বোঝা যায়, অনেক দিন এই পথে কারও পদচারণা হয়নি। ভবনের বাইরের দেয়ালে জমেছে শেওলা। ভেতরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। প্রতিটি কক্ষের শাটারগুলোতে ধরেছে মরিচা। কনফারেন্স কক্ষের আসবাবপত্রেও জমে আছে পুরু ধুলোর আস্তরণ। যেন অযত্ন ও অবহেলার নীরব সাক্ষ্য। এটাই পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের ভেতরের বাস্তব চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এখন পরিণত হয়েছে ভুতুরে বাড়িতে। নেই মুক্তিযোদ্ধাদের পদচারণা, নেই কোনো কার্যক্রমের চিহ্ন। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে নির্মিত এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত ও অযত্নে পড়ে আছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মুক্তিযোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে কমপ্লেক্সটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এতে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মাণ করে। ভবনের প্রাথমিক খরচ জোগাতে প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় দোকানঘর নির্মাণ করা হয়। তৃতীয় তলায় রয়েছে অফিস কক্ষ ও বিস্তৃত কনফারেন্স রুম, যেখানে স্থাপন করা হয়েছে উন্নতমানের আসবাবপত্র। নির্মাণকাজ শেষে ‘জে জে ট্রেডার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালে ভবনটি হস্তান্তর করে। একই বছরে উদ্বোধনের পর থেকে ভবনটি অবহেলায় পড়ে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন বলেন, উপজেলার ৫১৮ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ২৪২ জন জীবিত থাকলেও তারা কমপ্লেক্সে আসেন না। ফলে ভবন কিছুটা অগোছালো অবস্থায় আছে।
পটিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির উদ্যোগে কমপ্লেক্সের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম অতি শিগগিরই শুরু হবে।
এমআর/এমজে