জেলখানায় থাকা ব্যক্তিদের ভোটদানে বিশেষ নির্দেশনা ইসির

কারান্তরালে থেকেও গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ভোটারা। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০২৬ সালের গণভোটে জেলখানায় বা আইনি হেফাজতে অন্তরীণ ব্যক্তিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০০৮ (সংশোধন ২০২৫)-এর বিধি ১০ক অনুযায়ী, ‘ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং’ (আইসিপিভি) পদ্ধতির মাধ্যমে এই প্রথমবার বন্দিরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাটি কারা মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি জেলখানার বন্দিদের ভোটার নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম উন্মুক্ত করবে। প্রতিটি জেলখানার পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষ দুজন প্রতিনিধি মনোনীত করবেন, যারা বন্দিদের নিবন্ধনের কাজ পরিচালনা করবেন। আগ্রহী ভোটারদের একটি মুদ্রিত তালিকা সিল ও স্বাক্ষরসহ নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে মনোনীত প্রতিনিধিরা নির্ধারিত পোর্টালে ভোটারদের প্রয়োজনীয় তথ্য (.xls/.csv ফরম্যাট) আপলোড করবেন।
ইসি জানিয়েছে, নিবন্ধিত ভোটাররা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি ‘বহির্গামী খাম’ (ফরম-৯ক) পাবেন।
খামের ভেতরে যা যা থাকবে–
১. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য আলাদা দুটি ব্যালট পেপার।
২. ভোট প্রদানের নির্দেশাবলি ও একটি ঘোষণাপত্র (ফরম-৮)।
৩. রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা সংবলিত একটি ‘ফেরত খাম’ (ফরম-১০খ)।
উল্লেখ্য, সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারে কোনো প্রার্থীর নাম থাকবে না; শুধু বরাদ্দকৃত প্রতীক ও প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘর থাকবে।
নির্দেশনায় আরও জানানো হয়েছে, জেলখানার ভেতরেই ভোট প্রদানের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে একটি গোপন কক্ষ বা উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ভোটাররা ব্যালট পেপারে তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক (√) বা ক্রস (x) চিহ্ন দিয়ে ভোট দেবেন। ভোট দেওয়ার আগে ঘোষণাপত্রে নাম ও এনআইডি নম্বর লিখে স্বাক্ষর করতে হবে। যদি কোনো ভোটার স্বাক্ষর করতে অক্ষম হন, তবে অন্য একজন ভোটার সেটি সত্যায়ন করবেন।
ভোট প্রক্রিয়া শেষ হলে ভোটাররা ব্যালট দুটি ছোট খামে ভরে এবং স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রটিসহ একটি বড় হলুদ খামে (রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানাযুক্ত) ভরে সিলগালা করবেন। এই খামগুলো হবে ‘সেলফ অ্যাডহেসিভ’, যার জন্য কোনো ডাক মাশুল বা স্ট্যাম্প লাগবে না।
ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ খামগুলো সুরক্ষিতভাবে সংগ্রহ করবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় ডাক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবে। ডাক বিভাগ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ব্যালটগুলো সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এসআর/বিআরইউ