রাজস্ব আহরণে সমুদ্র ও স্থলবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দেশের রাজস্ব আহরণে সমুদ্র ও স্থলবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস হাউজসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যৌথ উদ্যোগে ‘রাজস্ব আদায়ে সমুদ্র ও স্থলবন্দরের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এবং জাতীয় রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, পণ্য খালাসে সময় হ্রাস এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং রাজস্ব আদায়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসবে। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চলমান ও প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়নের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।
উপদেষ্টা মোংলা বন্দরকে চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অর্থনীতিতেও বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়কপথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। এছাড়াও বন্দরটির সাথে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দরে সরকারি যে বিনিয়োগ করা হয়েছে সেটি দেশের উন্নয়নে আরও কীভাবে কার্যকর ও ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে তিনি জানান। একই সাথে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরকে দেশের একটি সম্ভাবনাময় বন্দর হিসেবে চিহ্নিত করে সব বন্দরকে আরও বেশি গতিশীল ও কার্যকর করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ সহজ হবে এবং সামগ্রিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
নৌপরিবহন সচিব নূরুন্নাহার চৌধুরী বলেন, সমুদ্র ও স্থলবন্দরের কার্যক্রমে দক্ষতা, শৃঙ্খলা এবং আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয় জোরদার করা গেলে বাণিজ্য সহজীকরণ ও রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগী সংস্কার, ডিজিটালাইজেশন এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে নীতিগত সমন্বয় জোরদার করা সময়ের দাবি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদ হোসাইন খান। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
এসএইচআর/এসএসএইচ