সামুদ্রিক অর্থনীতির বিকাশে ভূমিকা রাখে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমুদ্রসম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সামুদ্রিক কর্মকাণ্ডকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও কার্যকরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা ঈসা খানে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। সভায় হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং মেরিটাইম সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় সমুদ্র জরিপ, অফশোর স্থাপনা, সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ, মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্দর উন্নয়ন, জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, তথ্য বিনিময় ও প্রশিক্ষণ জোরদারসহ মেরিটাইম স্পেশাল ডাটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং মেরিটাইম স্পেশাল প্ল্যানিং প্রণয়নের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বক্তারা সব মেরিটাইম সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দুই দিনের এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক অ্যান্ড ওশানোগ্রাফিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং নৌবাহিনীর সার্ভে জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্রে পরিচালিত হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন।
সভায় জানানো হয়, হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ সমুদ্রগামী জাহাজের নিরাপদ নেভিগেশন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামুদ্রিক অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)-এর ‘সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি’ কনভেনশন অনুযায়ী উপকূলীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে যথাযথ হাইড্রোগ্রাফিক সেবা ও নটিক্যাল চার্টিং নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস চালু করা হয়।
পরে ২০০১ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং একই বছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ২৫টি মেরিটাইম ও সহযোগী সংস্থা এই কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করছে।
সভাপতির বক্তব্যে রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা আশা প্রকাশ করেন, পারস্পরিক সহযোগিতা ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটি হাইড্রোগ্রাফি ও সমুদ্রবিজ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের সমুদ্র অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনী নর্থ ইন্ডিয়ান ওশান হাইড্রোগ্রাফিক কমিশনের ২০২৫-২৭ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।
এমআর/এসএসএইচ