সড়কে পড়ে থাকা সেই ২ শিশুর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সড়কের পাশে দুই শিশুকে ফেলে যাওয়ার ঘটনায় তাদের বাবা মো. খোরশেদ আলম ও মা ঝিনুক আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) আনোয়ারা থানার উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোমেন কান্তি দে বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাঁশখালী উপজেলা থেকে খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে ওই দুই শিশু জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে আনোয়ারা উপজেলার ৬ নম্বর বারখাইন ইউনিয়নের শোলকাটা এলাকা থেকে ৪ বছরের আয়েশা আক্তার ও ১৪ মাস বয়সী মোরশেদকে অসহায় অবস্থায় উদ্ধার করেন এক অটোরিকশাচালক। তিনি শিশুদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দেন। খবর পেয়ে আনোয়ারা থানা-পুলিশ শিশুদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
চিকিৎসকদের মতে, ছোট শিশুটির জন্মগত রোগ এবং বড় শিশুটির চর্মরোগ রয়েছে। ঘটনার পরপরই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এরপর জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর শিশু দুটির দায়িত্ব নেয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর খোরশেদ আলম পুলিশকে জানান, তাদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহামনি এলাকায়। পারিবারিক বিরোধের জেরে তার স্ত্রীর অপকর্মের কারণে তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তিনি বাঁশখালীর মিয়ারবাজার লস্করপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।
খোরশেদ আলমের দাবি, প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস আগে তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় সংসারের কিছু জিনিসপত্র ও প্রায় ১৮ হাজার টাকা নিয়ে যান তিনি। এরপর দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো খোঁজ পাননি খোরশেদ।
তিনি আরও জানান, তার স্ত্রী ওই ছোট প্রতিবন্ধী শিশুটিকে দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করাতেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি অনেক জায়গায় জরিমানাও দিয়েছেন। শিশুদের মায়ের বাড়ি সাতকানিয়া থানার মৌলভীর দোকান এলাকায়।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘শিশুগুলোর মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া দুই শিশুকে বর্তমানে একজন অটোরিকশাচালকের মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
এমআর/বিআরইউ