দূরপাল্লার বাস চললেও যাত্রী কম মহাখালীতে

অনেকটা হঠাৎ করে কয়েক ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরার বিড়ম্বনা কমাতে এ অনুমতি দেওয়া হলেও রোববার সকালে ঢাকা থেকে অন্য জেলার উদ্দেশে বাস চলার প্রস্তুতিও দেখা গেছে।
মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কুড়িগ্রামগামী রাজিব পরিবহন, ময়মনসিংহগামী সৌখিন পরিবহন এবং শাহজালাল পরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই সঙ্গে রাজধানীর আভ্যন্তরীণ রুটগুলোর বাস তো চলছেই।
যাত্রীদের টানতে স্বাভাবিক সময়ের মতো ‘ছাইড়া গেলো মমিশিং’ (ময়মনসিংহ), ‘ছাইড়া গেলো মমিশিং’, ‘আসেন আসেন মমিশিং’ বলে ডাকতে শোনা গেল একজন পরিবহন শ্রমিককে। যাত্রী দেখলেই হাত ধরেও নিয়ে আসছেন অনেকে।

শাহজালাল পরিবহনের একজন বলেন, দুপুর ১২টা পর্যন্ত গাড়ি চালাতে পারবো, তাই গাড়ি বের করেছি।
নেত্রকোনোর যাত্রী শরিফ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি যাবো নেত্রকোনা, কিন্তু কোনো বাস যাবে না। শাহজালাল পরিবহনের ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাবো। এরপর ভেঙে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমি একা যাবো, ময়মনসিংহ পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে সাড়ে ৩শ টাকা। আমার বাড়ি যাওয়া খুবই দরকার, তাই যাচ্ছি।
সৌখিন পরিবহনের যাত্রী হাফেজ বোরহান উদ্দিন বলেন, আমি যাবো মাসকান্দার (ময়মনসিংহ)। অন্য সময় এ পর্যন্ত ভাড়া নেয় ১৫০ টাকা। আজকে ৩৫০ টাকা করে নিচ্ছে।
তবে টার্মিনালে যাত্রীর সংখ্যা খুব একটা বেশি দেখা যায়নি। সৌখিন পরিবহনের একটি বাসের চালক রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, আধা ঘণ্টা ধরে যাত্রীর জন্য বসে আছি, যাত্রী নেই। ঈদের পর আজকেই প্রথম গাড়ি বের করলাম।
তিনি বলেন, এখন মানুষ ঢাকায় ঢুকছে। ফলে ময়মনসিংহ, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, জামালপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় থাকা বাসগুলো ঢাকায় যাত্রী নিয়ে আসছে। কিন্তু ঢাকা থেকে বাড়িতে যাওয়ার যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুই সিটে একজন করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছে। সে মোতাবেক ওই সময় পর্যন্ত সব কারখানাগুলো বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ঈদের পর থেকেই কারখানা খোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিল্প-কারখানার মালিকরা। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পরই দেশের প্রতিটা অঞ্চল থেকে দলে দলে ঢাকাতে ফিরতে শুরু করেন শ্রমিকরা। তবে গণপরিবহন না থাকায় তাদের পড়তে হয় বিড়ম্বনা। পরে সে পরিস্থিতি এড়াতে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এমআই/এনএফ