বাজারে ইলিশ বিক্রি হবে না জেনেও খুঁজছেন ক্রেতারা

আব্দুল ওয়াহাব কাঁঠাল বাগান বাজার এলাকার বাসিন্দা। নিয়মিত বাজার করেন কাঁঠাল বাগান বাজারে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ইলিশ আহরণ ও বিক্রির নিষেধাজ্ঞার খবর দেখে গতকালই তার স্ত্রী কিছু ইলিশ কিনে রাখতে বলেছিলেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে পারেননি ওয়াহাব মিয়া। পরে আজ সকালে কাঁঠাল বাগান বাজারে গিয়ে দেখেন ইলিশের কোনো চিহ্নও নেই। বাধ্য হয়ে ইলিশের খোঁজে স্বল্প দূরত্বের কাওরান বাজারে আসেন। কিন্তু পুরো বাজার ঘুরেও মেলেনি কাঙ্খিত ইলিশ! এখন বাসায় কি জবাব দেবেন সে চিন্তা মাথায়!
কাওরান বাজারেই ওয়াহবের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। ওয়াহব বলেন, আমার স্ত্রী মিডিয়ার খবর দেখে গতকালই কিছু ইলিশ কিনতে বলেছিল। কিন্তু আমি তার কথায় পাত্তা দেইনি। পুরা কাঁঠাল বাগান বাজার খুঁজলাম, পেলাম না। ভাবলাম, কাওরান বাজারে তো পাওয়া যাবে। এসে দেখি, কারও কাছেই ইলিশ নেই।
রোববার মধ্যরাত থেকে থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও মজুত নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

সোমবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজার ও কাঁঠাল বাগান বাজার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বাজার দুটিতে সব ধরনের মাছ পাওয়া গেলেও কোথাও দেখা মিলছে না ইলিশের। বিক্রেতারা বলছেন, গতকাল রাতের মধ্যেই তারা সব ইলিশ বিক্রি করে দিয়েছেন।
কাওরান বাজারের মাছ বিক্রেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, কোথাও ইলিশ খুঁজে পাবেন না। শুধু, কাওরান বাজার না ঢাকার কোথাও ইলিশ খুঁজে পাবেন না। আমাদের কাছে যত ইলিশ ছিল গতকাল রাতেই সব বিক্রি করে দিয়েছি। ২৫ তারিখের পর আবার পাবেন, এরমধ্যে আর পাবেন না। অনেকেই ইলিশ কিনতে আসছে, কিন্তু আমাদের কাছে তো নাই।
আরেক ব্যবসায়ী জানান, গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত কাওরান বাজারের আড়তে ইলিশে ভরপুর ছিল। বিক্রেতা বেশিরভাগ মাছই বিক্রি করে ফেলছে। অনেক বিক্রেতা সব বিক্রি করতে না পারায় ফ্রিজে রেখে দিছে। আবার নিষেধাজ্ঞা ছেড়ে দিলে মাছগুলো বাজারে বিক্রি করবে।
ইলিশ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকাল থেকেই অনেক ক্রেতাই ইলিশ কেনার জন্য বাজারে আসছেন। কিন্তু ইলিশ না থাকায় ক্রেতাদের ফেরত দিতে হচ্ছে। অনেক ক্রেতা বাড়তি দাম দিয়েও ইলিশ নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন। কিন্তু ইলিশ না থাকা ও নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু মাছ থাকলেও সেটা বিক্রি করতে পারছেন না।
রোববার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় জানানো হয়, মা ইলিশ রক্ষায় দেশের ৩৮টি জেলায় বিশেষ অভিযানে নামছে সরকার। এদিন মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মৎস্য দফতর, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সমন্বিতভাবে এ অভিযান পরিচালনা করবে।
এনআই/এসএম