আগে ধূমপান ফ্যাশন ছিল, এখন ক্ষতি সম্পর্কে সবাই সচেতন

ধূমপান প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেছেন, এক সময় ধূমপানকে ফ্যাশন হিসেবে চিন্তা করা হতো। বর্তমানে মানুষ এর ক্ষতিকারক দিকগুলো বুঝতে পারছে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে ‘রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তকরণে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং আহসানিয়া মিশনের যৌথভাবে সভাটির আয়োজন করে।
মাহবুব আলী বলেন, ধূমপান প্রতিরোধে তামাকবিরোধী প্রচারণা আরও জোরদার করতে হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে দেশের গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সময় ধূমপানকে ফ্যাশন হিসেবে চিন্তা করা হতো। কিন্তু তামাকবিরোধী কার্যকর প্রচারণায় ধীরে ধীরে সামাজিক সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। ফলে মানুষের এই মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমানে পরিবর্তিত হয়েছে। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষ জানতে পারছে।
তিনি আরও বলেন, তামাকের ব্যবহারজনিত ক্ষতি প্রতিরোধে বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল স্বাক্ষর এবং অনুস্বাক্ষর করেছে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন, সংশোধন এবং এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ধূমপান নিরোধের জন্য প্রয়োজনে আইন আবারও সংশোধন হতে পারে। তবে তার আগে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে কার্যকর কৌশল প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কোনো ধূমপায়ীর অধিকার নেই একজন অধূমপায়ীর ক্ষতি করার। রেস্তোরাঁয় ‘ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান’ রাখার ফলে এটি পরোক্ষ ধূমপানের জন্য কতটুকু ক্ষতি করে সেটি আমরা বিবেচনায় রাখব। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই সম্ভব দেশকে তামাকমুক্ত করা।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খোন্দকার, ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি ড. এস এম খলিলুর রহমান এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের হেড অব প্রোগ্রামস-বাংলাদেশ মো. শফিকুল ইসলাম।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়ক মো. শরিফুল ইসলাম।
এআর/এমএইচএস