স্বর্ণ ডাকাতি করা ৮ জন গ্রেপ্তার

‘পুলিশ পরিচয়ে’ স্বর্ণ ডাকাতির এক মামলায় সাভারের আমিনবাজার থেকে আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা সবাই একটি ডাকাত দলের সদস্য। গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে একজন বহিষ্কৃত সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।
এ ডাকাত দলে পুরান ঢাকার তাঁতি বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও কারিগরও রয়েছেন। রোববার (৩১ জানুয়ারি) এ বিষয়ে উত্তরার ঢাকা জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পিবিআই।
এ সময় সংস্থাটির ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করত। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও সদস্যের নাম আমরা পেয়েছি। ওইসব সদস্যের মধ্যে আরও একজন সাবেক সেনা সদস্যের নাম পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বাকি সদস্যদের নাম প্রকাশ করছি না।’
এর আগে, ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভোরে সাভারের আমিনবাজার এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁতি বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদারের কাছ থেকে স্বর্ণ ডাকাতি করেন গ্রেপ্তার আসামিরা। ডাকাতরা তার কাছ থেকে একটি কালো ট্রলি ব্যাগের মধ্যে থাকা এক কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রায় ১৬৬ দশমিক ৫৫৩ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়েই তাদের গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, ‘তদন্তে নেমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি ডাকাত চক্রের চার জনকে (সুরেশ, মিঠুন, উজ্জ্বল ও মিহির) গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবার ও অভিযান চালিয়ে শনিবার মধ্যরাতে চক্রের আরও চার সদস্যকে (সোহেল আহমেদ পল্লব, সাবেক সেনা সদস্য ফারুক হোসেন, শংকর চন্দ্র পাল ও মিঠুন) গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার আট জনের মধ্যে ফারুক হোসেন নামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন বহিষ্কৃত সদস্য রয়েছেন। তিনি করপোরাল হিসেবে বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। জাতিসংঘের একটি মিশনেও অংশ নিয়েছিলেন। এ চক্রের গ্রেপ্তার আরেক সদস্য অপারেশনাল কাজে অংশ নেয়া সোহেল আহমেদ পল্লব। ২০১৮ সাল থেকে ডাকাতির কাজে যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫-৭টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে তার নেতৃত্বে থাকা এই চক্রটি।’
পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এই চক্রটি ধরতে অনেককেই নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আরও এক সাবেক সেনা সদস্যের এ ধরনের অপকর্মে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই, সেও নজরদারিতে রয়েছে।’ এছাড়া সাবেক পুলিশ সদস্য জড়িত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তাদের ডাকাতির ধরনের বিষয়ে পিবিআই জানায়, চক্রটি তিন ধাপে ডাকাতির কাজ করত। প্রথমত, তথ্য সংগ্রহ, পরবর্তীতে টার্গেট ব্যক্তির সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া, পরে সেসব লুণ্ঠিত মালামাল বাজারে বিক্রি করা। বহিষ্কৃত সাবেক সেনা সদস্য ফারুক হোসেন, মিঠুন চক্রবর্তী ও সুরেশ হালদার ডাকাতির কাজে তথ্য সংগ্রহ করতেন। অপারেশনাল দায়িত্বে ছিলেন সোহেল আহমেদ পল্লব, সহযোগী হিসেবে ছিল মিঠুন, উজ্জ্বল, মিহির, লুণ্ঠন করা চোরাই স্বর্ণ কিনতেন তাঁতি বাজারের আরেক ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ।
এআর/এফআর