সাকরাইন উৎসবকে ঘিরে পুরান ঢাকায় উপচে পড়া ভিড়

পৌষ মাসের শেষদিনকে বিশেষভাবে মনে রাখতে সাকরাইন উৎসবে মেতেছেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। এ উপলক্ষে দিনভর চলে ঘুড়ি উড়ানো আর কাটাকুটির খেলা। সঙ্গে নাচ-গান আর শীতের পিঠাপুলি খাওয়া। সব মিলিয়ে পুরান ঢাকা যেন সাকরাইনের আনন্দে মাতোয়ারা।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কোথাও যেন পা ফেলার সুযোগ নেই। গাড়ির লম্বা লাইন দীর্ঘ সময় ধরে থেমে থাকে একই জায়গায়। পুরান ঢাকার বাসিন্দারা এই রাতকে উপভোগ করলেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেককে।
বিশেষ এই দিনে পুরান ঢাকার সুস্বাদু সব খাবারের স্বাদ নিতে নানা জায়গা থেকে আসা ভোজনপ্রেমীরা ভিড় জমান নাজিরা বাজারের খাবারের হোটেলগুলোতে।
নাজিরা বাজারের বিখ্যাত সব খাবারের দোকানগুলোতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। একটি চেয়ারের বসার জন্যও অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘক্ষণ। তবুও আনন্দ-উৎসব লক্ষ্য করা যায় সবার চোখে-মুখে।

ব্যস্ততা বেড়েছে রেস্তোরাঁর মালিক-কর্মচারীদেরও। তবে এই ব্যস্ততা তাদের জন্য আনন্দেরও বটে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন তারা। অন্য দিনের তুলনায় এদিনে কয়েকগুণ বেশি বিক্রি হয়। রাতভর থাকে মানুষের আনাগোনা। কর্মচারীরাও পান মোটা অংকের বকশিস।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা রমজান আলী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নাজিরা বাজার এসেছেন খাসির চাপ খেতে। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য স্পেশাল। সারাদিন আনন্দ করেছি, এখন সবাইকে নিয়ে এসেছি খাবারের স্বাদ নিতে।
বাড্ডা থেকে বন্ধুদের নিয়ে সাকরাইন উৎসবে ঘুরতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে শুনতাম পুরান ঢাকার বাসিন্দারা এ উৎসবে আনন্দ মেতে উঠেন। আজ নিজ চোখে দেখলাম। তবে মানুষের জন্য পা ফেলার জায়গা নেই। সবমিলে পুরান ঢাকাকে আজ পৃথিবীর ব্যস্ততম এলাকা বললেও হয়ত ভুল হবে না।

টাকা দেওয়া-নেওয়ায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় বোখারী রেস্তোরাঁর কর্ণধার আব্দুল কাদের বোখারীকে। কেমন চলছে- জিজ্ঞেস করতেই হাসি মুখে তিনি বলেন, ভালোই চলছে। প্রত্যেক বছরেই সাকরাইনের রাতে এমন ভিড় থাকে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখি। অন্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বিক্রি হয় আজকের রাতে। সারারাত থাকবে মানুষের এই চাপ।
দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আনোয়ার হোসেন বলেন, সাকরাইন উৎসব হওয়ায় আজ রাতে মানুষ ও গাড়ির ভিড় অনেক বেশি। যার ফলে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এদিকে প্রত্যেক বছর আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে এ উৎসব উদযাপন করা হলেও এবার সাকরাইনে ফানুস ও আতশবাজি নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এইচআর/আইএসএইচ