সারাদেশে টিকাদান শুরু আজ

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজ (রোববার) সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম। ঢাকাসহ দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে চলবে টিকাদান। সকাল ১০টায় মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে টিকা নেবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মাধ্যমে গণটিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন তিনি। দেশজুড়ে আজ টিকাদান কার্যক্রম চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
রাজধানীর ৫০টি স্থানে দেওয়া হবে টিকা। এছাড়া সারাদেশের ৯৫৫টি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। গণটিকাদান কাজের জন্য প্রস্তুত আছেন ২ হাজার ৪০২ জন স্বাস্থ্যকর্মী। টিকা নিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৪ লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সারাদেশে গণটিকাদান কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, প্রথম দফায় দেশে যে ৫৬৭ জন টিকা নিয়েছেন, তারা সবাই সুস্থ আছেন। সুরক্ষা ওয়েবসাইটে দ্রুতই নিবন্ধনের সংখ্যা বাড়ছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৮০ হাজার জন টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন। টিকা নিয়ে অপপ্রচারে কান দিচ্ছে না মানুষ।
প্রথম দিনে টিকা নিচ্ছেন যেসব মন্ত্রী-আমলা
আজ (রোববার) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ টিকা নিচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-আমলা।
শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালে টিকা নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন টিকা নেবেন শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।
শনিবার রাতেই এসএমএস
আজ যারা টিকা নিচ্ছেন শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতেই তারা এসএমএস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, শুরুর দিনে সারাদেশে এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম ধাপের টিকা কবে নাগাদ শেষ হবে এবং দ্বিতীয় ধাপ কবে শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এখানে প্রথম বা দ্বিতীয় ধাপ নেই, এটা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে। প্রথম ডোজ নেওয়ার ৪ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
৫৫ বছরের নিচে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন নয়
‘৫৫ বছরের নিচে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন নয়’ বলে জানিয়েছেন তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, সম্মুখযোদ্ধারা ছাড়া ৫৫ বছরের নিচে কোনো মানুষ আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। তবে ৫৫ বছরের নিচে সম্মুখযোদ্ধাদের তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে আইসিটি মন্ত্রণালয় তাদের রেজিস্ট্রেশন আগেই সম্পন্ন করে রাখবে বলেও জানান তিনি।
সম্মুখযোদ্ধাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিদের কেন্দ্রীয়ভাবে তালিকা না পাঠানো হলে স্ব-স্ব জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে তালিকা দেওয়ার অনুরোধ করছি।’
টিকা নিবন্ধনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহযোগিতা
ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে যারা অনলাইনে টিকা নিবন্ধন করতে অপারগ, তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সহায়তা করবেন ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা সহকারী কর্মীরা।
১০ ফেব্রুয়ারির আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ নয়
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে যে কেউ ছুটি নিতে পারবেন।’
ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার টিকা কর্মসূচি বন্ধ থাকবে। এছাড়া বাকি দিনগুলোতে টিকা কার্যক্রম চলবে। মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে প্রস্তুত আছেন। যারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন না তাদের সহায়তা করবেন মাঠ স্বাস্থ্যকর্মীরা।’
এইচকে
