২০২২ কেমন ছিল?

Audity Falguni Gayen

০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ এএম


২০২২ কেমন ছিল?

ছবি : সংগৃহীত

রেনেসাঁ যুগের অমর ইতালীয় ভাস্কর মাইকেলেঞ্জেলো (Michelangelo) ১৫০১-১৫০৪ সাল নাগাদ সেমিটিক পুরাণের অতিকায় দৈত্য গলিয়াথকে পাথরের গুলতি ছুড়ে বধ করা, কিশোর ‘ডেভিড’ বা ‘দাভিদ’-এর ৫.১৭ মিটার বা ১৭ ফুট উঁচু এক মর্মর মূর্তি গড়েছিলেন।

‘দ্য বুক অফ স্যামুয়েল’-এ বর্ণিত অতিকায় দানব গলিয়াথ প্রায় ৪০ দিন ধরে প্রতি সকাল ও সন্ধ্যায় ইসরাইলের অধিবাসীদের দ্বন্দ্ব যুদ্ধে আহ্বান জানালে অবশেষে কিশোর দাভিদ পাথরের গুলতি হাতেই এই দানবকে মোকাবিলা করে ও জয়ী হয়। পুরাণের এই রূপকের আড়ালে অসম প্রতিপক্ষের সাথে যুদ্ধেও ‘দুর্বলতর শক্তি’ যে তীব্র জেদ ও নিষ্ঠায় কখনো কখনো জয়ী হতে পারে, তেমন আভাসই মেলে।

অসীম ক্ষমতাশালী বিশ্বব্যাংকের সাথে ‘পদ্মা সেতু’ প্রশ্নে বাংলাদেশের বিজয়ও অনেকটা দাভিদ ও গলিয়াথের লড়াইকেই মনে করিয়ে দেয়। ২০১২ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রচুর দুর্নীতি হচ্ছে বলে বিশ্বব্যাংক অভিযোগ করে যদিও বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ১.২ বিলিয়ন মার্কিনি ডলার সাহায্য দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

আরও পড়ুন >>> ২০২২ সাল নারীর জন্যে কেমন ছিল? 

দুর্নীতির সাথে জড়িত হিসেবে সন্দেহজনক সব সরকারি কর্মকর্তাদের অবিলম্বে ছুটিতে না পাঠালে বিশ্বব্যাংক সব সাহায্য বন্ধ করার হুমকিও দেয়। বিব্রত বাংলাদেশ সরকার সাথে সাথেই ‘সন্দেহজনক’ সব সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠালেও বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুত ১.২ বিলিয়ন ডলার সাহায্য ফিরিয়ে নেয়।

পাঁচ বছর পর কানাডার আদালতের রায়ে পদ্মা সেতুর সাথে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ গ্রহণের সব অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং নির্মাণ সহযোগী কোম্পানি এস,এন,সি, লাভালিনের তিন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও পূর্বের ‘ঘুষ প্রদানের অভিযোগ’ থেকে মুক্ত দেওয়া হয়। 

পদ্মা সেতুর পরেই ২০২২ সালে দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাফল্য মেট্রোরেলের উদ্বোধন। অনেক জল্পনা-কল্পনা ও তর্ক-বিতর্কের শেষে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধন হলো।

বিশ্বব্যাংকের এমন ‘নেকড়ে আসছে’ জাতীয় কান্না বাংলাদেশের সাথে এই প্রথম নয়। ১৯৭৪ সালে মার্কিনি অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়ী, সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশের ‘বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন’ লেখার সময় বিশ্বব্যাংকের এক তরুণ অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ সরকারের নানা দুর্নীতির বিষয়ে ‘স্টোরি’ রচনা করলেও বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অর্থ বিষয়ক সচিব মতিউল ইসলাম সেই প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করেন যেহেতু ‘স্টোরি’ বা ‘গল্প’গুলো ছিল ভিত্তিহীন (পদ্মা ব্রিজ এ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক, মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, জুন ১৪-২০২২)।

‘ছোট দেশ’-এর বিরুদ্ধে দানবীয় বৈশ্বিক সংস্থার যাবতীয় ভিত্তিহীন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ২০২২-এর ২৫ জুন পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভবপর হয়েছে। এছাড়াও এই সেতুর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১টি জেলা দেশের মূলধারার অর্থনীতির সাথে সংযুক্ত হবে এবং দক্ষিণের দুই বড় সমুদ্র বন্দর মংলা ও পায়রা ঢাকার সাথে অতি সহজেই যুক্ত হবে।

আরও পড়ুন >>> টিপ পরছোস ক্যান : ব্যক্তি স্বাধীনতা কোথায়? 

দেশে বার্ষিক জিডিপিতে প্রতি বছর এর ফলে ১.২৩ শতাংশ লাভ অর্জিত হবে এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি এই সেতুর ফলে ২.৫ শতাংশ বাড়বে। এছাড়াও এই সেতু পদ্মা রেল লিঙ্ক প্রকল্পে সংযুক্ত হবে বলে গোটা বাংলাদেশেই ট্রান্স-এশীয় রেল নেটওয়ার্কের একটি সাব-রুট হওয়ার ফলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বাড়বে।

ঢাকার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমের মংলা বন্দরের গুরুত্ব কমবে এবং ঢাকা-মংলার অভ্যন্তরীণ কার্গোর চলাচল বাড়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে চাপ কমবে। এছাড়াও ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোর ভেতর গাড়ি এবং বাসে করে যাতায়াতে দুই ঘণ্টা আর ট্রাকে করে যাতায়াতে দশ ঘণ্টার বেশি সময় বেঁচে যাবে। ভ্রমণ সময়ে দশ শতাংশ হ্রাস দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে ৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি যোগ করবে বলে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির এক প্রতিবেদনে জানা যায় (ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট অফ পদ্মা ব্রিজ, মোহাম্মদ তুহিন আহমেদ, দ্য ডেইলি স্টার, আগস্ট ১১, ২০২২)।

পদ্মা সেতুর পরেই ২০২২ সালে দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাফল্য মেট্রোরেলের উদ্বোধন। অনেক জল্পনা-কল্পনা ও তর্ক-বিতর্কের শেষে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধন হলো। বেশ কয়েক বছর ধরেই ঢাকা পৃথিবীর ‘দ্বিতীয় বৃহত্তম বসবাস অযোগ্য নগরী’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল তার অসীম অনন্ত যানজটের জন্য।

ঢাকা মেট্রোরেলের গতি হবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় ৬০,০০০ যাত্রী আনা-নেওয়া করতে পারবে। ফলে পথে পথে বিশৃঙ্খল যানবাহনের জট কমবে ও নাগরিক পরিসর বাড়বে। বিদ্যুৎ পরিবাহিত এই ট্রেনের কারণে গ্রিনহাউজ গ্যাস বা অন্য কোনো ক্ষতিকর বর্জ্য নিঃসরিত হবে না (ক্যান দ্য এমআরটি বি আ গেইম চেঞ্জার ফর ঢাকা? দ্য ডেইলি স্টার, ২৯ ডিসেম্বর  ২০২২)।

আরও পড়ুন >>> যশোরে প্রকাশ্যে নারীকে মারধর : নিরাপত্তা কোথায়? 

‘ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ)’-এর ২০ বছর মেয়াদি ‘স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান-এসটিপি’র মানবসন্তান হলো এই মেট্রোরেল। সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আর একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে তার সর্বস্তরের নাগরিকের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণ।

ইউনিসেফের সূত্র উল্লেখ করে ইংরেজি সংবাদ সংস্থা ‘ইউএনবি’-এর ১৩ মে ২০২২ তারিখের প্রতিবেদন জানাচ্ছে—বাংলাদেশ, পেরু, ভিয়েতনাম এবং ফিলিপাইনই ‘কোভিড-১৯ গণ টিকাদানের সাফল্য কাহিনি।’

২০২১ সালের জুনে প্রথম যখন কোভ্যাক্সের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ বাংলাদেশে এলো, তখনো দেশের চার শতাংশেরও কম প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক এই ভ্যাকসিন পেয়েছে। আর ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ বা এক বছরেরও কম সময়ে বাংলাদেশের মোট ৬৭ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে।

পৃথিবীর ১২১টি দেশের ভেতর বাংলাদেশ কোভিড-১৯ টিকাদানের সাফল্যে পঞ্চম স্থান অধিকারী। অন্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর ভেতর রয়েছে নেপাল (৬ষ্ঠ), পাকিস্তান (২৩তম), শ্রীলঙ্কা (৩১তম) এবং ভারত (৭০তম)। মোট ৮০ স্কোর তুলে বাংলাদেশের অবস্থান কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কম্বোডিয়া ও রুয়ান্ডার নিচে। 

আরও পড়ুন >>> জনগণের টাকায় আনন্দ উল্লাস! 

এই তো গেল ২০২২-এ বাংলাদেশের সাফল্যের তিনটি প্রধান দিক। পাদপ্রদীপের উল্টো দিকে ২০২২ জুড়ে দেশ থেকে বিদেশে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার, শিক্ষাক্রমে মৌলবাদী আধেয়র সংযুক্তি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বাড়া, দেশে গুম, খুনসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক উদ্বেগ কিন্তু ছিলই।

পাশাপাশি দু’বছরের কোভিড ও কোভিড পরবর্তী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দেশে জিডিপি কমা, বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি তথা দৈনন্দিন নানা নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিলই। তবে পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোসহ সারা পৃথিবীই বেকারত্ব বা মুদ্রাস্ফীতি এখন তুঙ্গে। আমাদের সাফল্যের পাশাপাশি এক ঝলক তবে চোখ বোলানো যাক ব্যর্থতার দিকগুলোয়ও—

দেশ থেকে বিদেশে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার—২৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখে ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’-এ রেজাউল করিমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে সেই ২০০৩ সাল থেকে অদ্যাবধি দেশ থেকে টাকা বিদেশে পাচার বিষয়ক ৯৭৬টি মামলার ভেতর মাত্র ২০৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এমন মোট ৩২২টি মামলা দায়ের করা হলেও এক ২০২১ সালেই ২০১৮-র তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ অর্থ পাচার বিষয়ক মামলা দায়ের হয়েছে। এমন মোট ৮৫৬টি মামলায় ৫,০০০ কোটি টাকা অনাদায়ী হয়ে দেশের বিভিন্ন আদালতে ঝুলছে।

মূলত ‘লেটার্স অফ ক্রেডিট’ বা এলসি-র মাধ্যমেই দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয় বলে জানান ‘বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ ইউনিটের ব্যুরো চীফ আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান। একদিকে দেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রতিদিন তিনবেলা খাবার জোগাড়ে হিমশিম হচ্ছে, অন্যদিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, রাজনীতিক বা সরকারি কর্মকর্তা মালয়েশিয়া থেকে কানাডার বেগমপাড়া অবধি দেশের সম্পদ পাচার করে কেউ কিনছে ‘সেকেন্ড হোম’।

আরও পড়ুন >>> আর কত মাটির কান্না? 

পাঠ্যক্রম থেকে প্রগতিশীল লেখকদের ক্রমাগত বিযুক্তকরণ ও সারা দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার—হেফাজতে ইসলামের সাথে বিদ্যমান ক্ষমতাসীন সরকারের ১৩ দফা চুক্তি অনুসারেই সারা দেশেই শিক্ষা পাঠক্রম থেকে অন্য ধর্মের লেখক-কবিদের লেখা বাদ দেওয়া বা ইসলামী ভাবধারার পাঠ্যক্রমের সংযুক্তি বেড়েছে।

সারা দেশেই তরুণ-তরুণীসহ সাধারণ মানুষের পোশাক, সম্বোধন রীতিসহ নানা কিছুতেই কয়েক দশকের তুলনায় ইসলামী মতাদর্শের বিস্তার লক্ষ্যণীয়। গোটা ২০২২ জুড়ে দেশের একাধিক জেলা শহরে কোনো কারণ ছাড়াই বা নিছক হুজুগের বশে একটি স্কুলে এক সংখ্যালঘু শিক্ষককে ছাত্রদের হাতে জুতাপেটা ও গ্রেপ্তার ও এক মহাবিদ্যালয়ে স্বয়ং অধ্যক্ষকে জুতাপেটা ও গ্রেপ্তার বা আর এক নারী শিক্ষককে হয়রানি জাতীয় ঘটনা ঘটেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আর একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে তার সর্বস্তরের নাগরিকের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণ।

সবচেয়ে ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে মাগুরার একটি সংখ্যালঘু গ্রাম পুরোপুরি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার। ২০২২-এর ১৬ জুলাই শুক্রবার সকালে স্থানীয় সংখ্যাগুরু জনতার মাইকিংয়ে উত্তেজিত আহ্বানের প্রেক্ষিতে নড়াইলের দীঘলিয়া গ্রামে একটি মন্দিরসহ গোটা গ্রাম আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

এছাড়াও ২০২২-এর ৮ জুলাই খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার জয়সেন পাড়ায় অন্তত ৩৭টি পাহাড়ি বৌদ্ধ বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় ও ঘরগুলোর বহু মূল্যবান জিনিস-পত্র লুট করা হয়।

গুম-খুন—সাম্প্রতিক সময়ে বুয়েটের নিহত ছাত্র ফারদীন, প্রবল আওয়ামী লীগ সমর্থক দুরন্ত বিপ্লবের শবদেহ নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠা বা কয়েক বছর আগে বুয়েটেরই ছাত্র আবরার ফাহাদের নিষ্ঠুর হত্যাসহ কিছু মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই নাগরিক মনে প্রবল বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আবার পাশাপাশি মরিয়ম মান্নানের ঘটনার মতো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক নানা সমস্যা আড়াল করতে যাওয়ার মতো কৌতুককর ঘটনাও ঘটেছে।

আরও পড়ুন >>> সম্প্রীতি ফিরে আসার প্রত্যাশায় 

হংকং-ভিত্তিক ‘এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনে’র মতে ২০০৯ সাল থেকে বা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬১৯ জন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটকের পর লাপাত্তা হয়ে গেছেন (বিবিসি বাংলা, ২১ আগস্ট ২০২২)।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘দৈনিক প্রথম আলো’-র এক প্রতিবেদনে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয় যেখানে তিনি বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে যারা গুম হয়েছিল বলে কয়েকদিন আগে একটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ জন ফেরত এসেছে আর ২০ জন হত্যাসহ বিভিন্ন দাগি আসামি। তারা নিশ্চয়ই অনেকে পালিয়ে আছে। আবার কিছু কিছু গুম হয়েছে তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তালিকার মধ্যে তাদের নামও আছে।’

অর্থনীতির সার্বিক হালচাল—২০২১-২২ অর্থবছরে সারা পৃথিবীতে অতিমারির পরেও বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.২ শতাংশ। তবে পৃথিবীর ‘দ্রুততম বর্দ্ধনশীল অর্থনীতি’-এর অন্যতম বাংলাদেশেও যে কোভিডের দুইবছর (২০২০-২২), রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পুনরায় কোভিডের আসন্ন উত্থানের কারণে যে হুট করে বেকারত্ব হার বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে না সেটা বলা যাবে না।

অদিতি ফাল্গুনী ।। উন্নয়নকর্মী, কবি, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক

সম্পর্কিত

Link copied