আলোচনা আরও হবে, ঘোষণাপত্র তৈরিতে সহযোগিতায় প্রস্তুত জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপরে ঘোষণাপত্র নিয়ে আজকে ছিল প্রাথমিক আলোচনা। দ্বিতীয় পর্বে মতবিনিময় শেষে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে। সেই বৈঠকে আহ্বান করা হলে সহযোগিতা করতে জামায়াত প্রস্তুত আছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় সভায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও জাতীয় ঐক্যকে ধারণ করে স্বাধীনতার পূর্বাপর এবং জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তীতে রাজনৈতিক গতিধারাকে একটা ঐক্যের পথে পরিচালিত করার স্বার্থে, বস্তুনিষ্ঠ সব তথ্য তুলে ধরে জুলাই অভ্যুত্থানে ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সব দল একমত হয়েছি।
আরও পড়ুন
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপরে ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলসমূহকে নিয়ে মতবিনিময় সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। আমরা চার সদস্যের প্রতিনিধি এখানে জামায়াতের পক্ষ থেকে অংশ নিয়েছিলাম। আমরা আজকের এই সর্বদলীয় বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে মতামত ব্যক্ত করেছি। বৈঠকে ড. ইউনুস সবাইকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, উপস্থিত সব রাজনৈতিক দল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও জাতীয় ঐক্যকে ধারণ করে স্বাধীনতার পূর্বাপর এবং জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তীতে রাজনৈতিক গতিধারাকে একটা ঐক্যের পথে পরিচালিত করার স্বার্থে, বস্তুনিষ্ঠ সব তথ্য তুলে ধরে জুলাই অভ্যুত্থানে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হোক, এ ব্যাপারে সব দল একমত হয়েছি। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার জন্য দু-দিন আগ থেকে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ঘোষণাপত্রের খসড়া পেশ করা হয়েছিল। সেই খসড়াগুলো সবাই সময়মতো পায়নি। যারা সময় পেয়েছেন তারা অল্প সময় পেয়েছেন। অনেকে দলীয় ফোরামে আলোচনা করার সময় পাননি। সেজন্য সুনির্দিষ্ট করে জুলাই ঘোষণাপত্রের ওপরে বিষয় ধরে ধরে আলোচনা করার পরিবেশ ও সুযোগ আজ ছিল না।
পরওয়ার বলেন, ‘আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সরকারের এমন একটা দলিল তৈরির পেছনে অস্থিরতা, অসংগতি বা কোনো সমন্বয়হীনতার প্রয়োজন নেই। ধীরস্থিরভাবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের এক্সচেঞ্জ অব ভিউ দরকার, মতবিনিময় দরকার। কারণ অনেক মৌলিক জিনিস এই কাঠামো থেকে বাদ পড়েছে।’
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, বাংলাদেশ ইসলামিক শক্তি, একটি বিশাল ইসলামিক শক্তি। এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে তাদের অসাধারণ ত্যাগ রয়েছে। বহু মানুষকে শহীদ করা হয়েছে, নিরীহ নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে নেওয়া হয়েছে। এই সত্য ইতিহাসগুলো জুলাই ঘোষণাপত্রের কাঠামোতে স্থান পায়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে একজন উপদেষ্টা দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন— আপনাদের সব কথা আমরা ধৈর্য সহকারে শুনেছি, আজকের এই আলোচনা প্রাথমিক আলোচনা। ওই উপদেষ্টা স্বীকার করে বলেছেন যে, সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের কিছু গ্যাপ হয়েছে। ওই উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের এই বৈঠক প্রাথমিক বৈঠক। বৈঠকে যে মতামত আপনারা তুলে ধরেছেন এটা বিশ্লেষণ করে আবার দ্বিতীয় পর্বে মতবিনিময়ের জন্য আহ্বান করা হবে।
এর আগে বিকেল ৪টায় প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় সভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা অংশগ্রহণ করেন। সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল ও অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
জেইউ/এমজে