বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান এবি পার্টির

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘোরানো দিন ঐতিহাসিক ৪ আগস্ট স্মরণে রাজধানীতে আয়োজিত পতাকা মিছিলের শুরুতে এ আহ্বান জানান মঞ্জু।
বিকেল ৪টায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে গণপ্রতিরোধ স্মরণে জাতীয় পতাকা মিছিল শুরু হয়। মিছিলের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণঅভ্যুত্থানে দলের ব্যানারে না হলেও নির্দলীয় অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সমর্থন ও ভূমিকা রেখেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তাদের শত শত নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছে এবং হাজার হাজার সমর্থক আহত ও পঙ্গু হয়েছে। কিন্তু এখন কোন দলের অবদান বেশি তা নিয়ে তারা পরস্পরকে আক্রমণ করে কথা বলছে।
দেশ ও জাতির কল্যাণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছরের জুলাইয়ের শুরু থেকে এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল দলীয় ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। ৪ আগস্ট দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রদের আহ্বানে দেশবাসীকে ঢাকামুখী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জুলাই-আগস্টজুড়ে এবি পার্টি প্রকাশ্য দলীয় ব্যানারে রাজপথে সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, কারা নির্যাতন ভোগ করেছে। আমাদের অংশগ্রহণ ছিল দলগত, তবে আমরা মনে করি আমাদের অবদান অতি ক্ষুদ্র ও নগণ্য। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাকর্মীরা নির্দলীয় পরিচয়ে সবচাইতে বেশি ত্যাগ ও অবদান রেখেছে এই অভ্যুত্থানে। কিন্তু এখন তারা দলীয়ভাবে ক্রেডিট নিতে গিয়ে বিবাদে জড়াচ্ছেন, যা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়।
মঞ্জু বলেন, দলীয়ভাবে এনসিপি কোনো অবদান দাবি করতে পারে না, কারণ এনসিপির জন্ম হয়েছে অভ্যুত্থানের পরে।
এনসিপির নেতৃত্বে এখন যারা আছেন তাদেরকে গণঅভ্যুত্থানের মূল নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবদানের বিতর্কে জড়িয়ে কেউ কাউকে আপসকামী এবং সাবেক ছাত্রলীগ বলে সম্বোধন করা উচিত নয়। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে এ জাতীয় বিভেদ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র যদি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ও আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়ন হতো, তাহলে এটি একটি ঐতিহাসিক দলিলে পরিণত হতো। কিন্তু তা না করে একতরফাভাবে এটি উপস্থাপন করাটা শোভনীয় হচ্ছে না। আমরা জানি না, এটি কোথায়, কার মাধ্যমে এবং কী প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ প্রায় প্রস্তুত। কিন্তু সেটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে– সেই রূপরেখা আমাদের জানানো হয়নি। সুতরাং, জুলাই সনদকে কার্যকর করতে হলে আগে তার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, নাসরিন সুলতানা মিলি।
এরপর পতাকা মিছিলটি বিজয় একাত্তর চত্বর থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল, বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জেইউ/এসএসএইচ