অন্যজনের লাশ রেখে জিয়ার জানাজা পড়েছে বিএনপি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে বিএনপি প্রতারণা করছে। সেনাবাহিনীর নির্দেশে চট্টগ্রাম থেকে জিয়াউর রহমানের লাশ ঢাকায় আনা হয়েছিল। কিন্তু জিয়ার নামে যে লাশ আনা হয়েছিল, সেই লাশ জিয়ার ছিল না। কারণ সে সময় তিনজন সেনা অফিসারের লাশ একসঙ্গে ছিল। সেখান থেকে না দেখেই একটি লাশ ঢাকায় আনা হয়েছিল। ফলে এটা যে জিয়ার লাশ তার প্রমাণ নেই।
রোববার (২৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) এবি তাজুল ইসলাম।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল (শনিবার) মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘জিয়ার লাশ নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন প্রতারণা করছে।’ আওয়ামী লীগ নয় বরং বিএনপি জিয়ার লাশ নিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণ করেছে। কারণ তারা অন্যজনের লাশ রেখে জিয়ার জানাজা পড়েছে। এটা ধর্মীয়ভাবে বৈধ নয়। এটি নিয়ে বিএনপি প্রতারণা শুরু করেছে।
৫০ বছর পরও দেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মিথ্যা খবর ছাড়াচ্ছে বিএনপি জামায়াত চক্র। তারা মুক্তিযুদ্ধের নায়কদের কথা তুলে না ধরে খলনায়কদের নায়ক হিসেবে তুলে ধরছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর দিন ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করায়। এখন বিএনপি প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষকের ইতিহাস বিকৃত করছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার তিন বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করা হলে মাত্র ১০-১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ধনী দেশে পরিণত হতো। সোনার বাংলাদেশে পরিণত হতো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এখন সেই দেখানোর পথে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এখন দারিদ্র্য কমে আসছে। কেউ আর খলি পয়ে হাঁটে না, না খেয়ে থাকে না।
দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে বয়কটের আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। এই দেশ থেকে চিরবিদায় করতে হবে। আর এই পরাজিত শক্তিকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরদেহ থাকার প্রত্যক্ষদর্শী আমি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরদেহ সম্পর্কে, তার বডি এখানে এসেছে কি-না সে সম্পর্কে যে কথাগুলো এখন আওয়ামী লীগ বলেছে, আমি শুধু আজকে তার একটা প্রমাণ তুলে ধরতে চাই যে, চট্টগ্রাম থেকে জিয়াউর রহমানের মরদেহ তোলা হয়, পরে তার পোস্টমর্টেম করা হয়। ডা. তোফায়ে-ল আহমেদ তার পোস্টপোর্টেম করেছিলেন এবং ২২টি বুলেট তার শরীর থেকে বের করেছিলেন।’
‘চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমান লাশ নেই’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীদের নানা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারপরে বিগ্রেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহ (প্রয়াত) তার মরদেহকে সামরিক এয়ারক্রাফটে করে কুর্মিটোলায় নিয়ে এসেছিলেন, যেটা আমরা সবাই দেখেছি। আমার মনে হয় তখন ড. মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এসএ বারী এটি (উপ-প্রধানমন্ত্রী) প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আমরা সেখানে দেখেছি- একটা কাঁচের বাস্কেট ছিল, সেখান থেকে তার দেহ দেখেছি।’
এমআই/এসকেডি