টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার দাবি প্রবাসীদের

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের মধ্যে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ‘স্বাস্থ্য কথা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেখানে অবস্থানরত ইপিএস কর্মী ও অন্যান্য পেশাজীবীরা অংশ নেন।
ওয়েবিনারের মুক্ত আলোচনা পর্বে প্রবাসী কর্মীরা টেলিমেডিসিন সার্ভিসের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার দাবি উপস্থাপন করেন। তারা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি হটলাইন চালু করারও অনুরোধ জানান।
সিউলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ওয়েবিনারটিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মিজ ফারজানা শারমিন বক্তব্য রাখেন।
এতে শুভেচ্ছা বক্তব্যের শুরুতেই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন দক্ষিণ কোরিয়ায় মারা যাওয়া সব ইপিএস কর্মীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি ইপিএস কর্মীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ ধরনের ওয়েবিনারের আয়োজন করার জন্য সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আজকের ওয়েবিনার স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠিত হলেও এর গুরুত্ব অনেক। সম্পদের সীমাবদ্ধতা ও জনবলের স্বল্পতা থাকা সত্ত্বেও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রবাসীদের কল্যাণ সাধনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি প্রবাসী কর্মীদের যেকোনো সমস্যায় মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন।
এ সময় ডা. হেলাল উদ্দীন আহমেদ দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করেন। যেখানে তিনি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, শরীর চর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও সুস্থ বিনোদনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। সে সঙ্গে তিনি প্রবাসীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাস পরিহার করারও পরামর্শ দেন।
আলোচনায় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মিজ ফারজানা শারমিন বলেন, মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একে অপরের সঙ্গে জড়িত। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত ইপিএস কর্মীদের মানসিক স্থিতির জন্য কাজের পাশাপাশি দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন ও নির্মল বিনোদনের ওপরে গুরুত্বারোপ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের অকাল মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে মাত্র ১২ দিনে তিন বাংলাদেশি কর্মী আকস্মিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সার্বিক সুস্থতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল এবং নিজেকে সুস্থ রাখতে পারলেই পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখা সম্ভব। তাই তিনি শত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ইপিএস কর্মীদের নিজেদের যত্ন নেওয়ার অনুরোধ জানান এবং এ লক্ষ্যে যথেষ্ট বিশ্রামসহ সুষম খাদ্যাভ্যাসের ওপর জোর দেন।
ওয়েবিনারের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে দৈনন্দিন জীবনে যে মানসিক চাপের সম্মুখীন হন, তা থেকে বেরিয়ে আসতে এক নতুন দিক নির্দেশনা পাবেন বলে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এমএইচএস