অস্ট্রেলিয়ায় নারী সহিংসতা রোধে সক্রিয় বহুমাত্রিক সংগঠন

নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা, সেবাদান ও নারীবান্ধব জীবন ব্যবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার প্রশংসা থাকলেও বিপরীতে আছে সহিংসতার উদাহরণও। স্থানীয় শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এ চিত্র চোখে পড়ার মতো। তবে এর মাত্রা কিছুটা বেশি মাইগ্রেন্ট কমিউনিটিতে।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী নারীরাও প্রতিনিয়ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বন্ধে দেশটির সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বেশকিছু সংগঠন।
দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নারীদের একটি সংগঠন সিডনির ‘স্পিক আপ ইনক’। সংগঠনটির প্রধান আছমা আলম কাশফি বলেন, আমরা নারী উন্নয়নে কাজ করছি। নারীদের পাশে থাকতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার সরকারও নারী উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। আমরা সরকারের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীদের নিয়ে কাজ করছি।
২০১৯ সালে কমিউনিটিতে একজন বাংলাদেশি নারী পারিবারিক সহিংসতায় খুন হোন। তারপর আরও বেশকিছু বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, যাদের বেশিরভাগই স্বামী নির্যাতনের শিকার। এ ধরনের নারীদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে আরও কাজ করছেন ‘কালচার ডাইভারসিটি ইনক’-এর প্রতিষ্ঠাতা সাবরিন ফারুকী।
তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেন্ট নারীদের নিয়ে কাজ করছি। নারীরা যেন কাজের ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যায়, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে সে লক্ষে কাজ করছে কালচার ডাইভারসিটি ইনক। এখানে নারীদের জন্য সরকারিভাবে ফ্রি ড্রাইভিং, ফ্রি ইংরেজি শেখার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া, নারীরা যেন ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, সেটা নিয়েও সংগঠনটি কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন সাবরিনা।
গত ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় বেশ কয়েকটি সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। সিডনির ল্যাকান্বার স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে নবধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘বিশ্ব নারী দিবস’ পালনে সংগঠনের সাধারণ সদস্য সাবেক ডেপুটি মেয়র কার্ল সালেহ ও আর্মেনিয়ান কমিউনিটির নেতা রোজানা হাসান, সমাজ ও গণমাধ্যমকর্মী আবুল কালাম আজাদ খোকন উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, ‘নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’ এ প্রতিপাদ্যের সঙ্গে মিল রেখে নারী কেন্দ্রিক বৈষম্য ও নির্যাতন রুখে দেওয়ার প্রত্যয়ে ‘ওমেন কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া ইনক’ সিডনিতে নানা আনুষ্ঠানিকতায় নারী দিবস ২০২১ পালন করেছে। এতে অংশ নেন বাংলাদেশি কমিউনিটির নারীরাসহ আরও অনেকেই।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নসহ অন্যান্য শহরগুলোতে আলাদাভাবে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
অস্ট্রেলিয়ায় ব্যুরো অফ পার্সোনাল সেফটি জরিপ (২০১৬) অনুযায়ী, ২ দশমিক ২ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান নারী তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে যৌন সহিংসতার এবং ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন নারী মানসিক নির্যাতনের শিকার হোন। তবুও অস্ট্রেলিয়া একটি নারীবান্ধব দেশ বলেই পরিচিত। এখানে নারীরা ড্রাইভিং, কর্মক্ষেত্রে সমতা, স্বেচ্ছায় বিচ্ছেদসহ আরও বিভিন্ন স্বাধীনতা পেয়ে থাকেন।
এমএইচএস